সমীর মণ্ডল, মেদিনীপুর
ভোট-রাজনীতির বাজারে ‘পাইয়ে দেওয়া’র অভিযোগ নতুন কিছু নয়। কিন্তু বিষয়টি ‘অনৈতিক’ বুঝতে পেরে গ্রহীতাই যদি চিঠি লিখে তাঁর নাম বাদ দেওয়ার আর্জি জানান? সম্প্রতি এমনটাই ঘটেছে গড়বেতার জগারডাঙ্গা এলাকায়।
মাস কয়েক আগে দুয়ারে সরকার শিবির চলছিল। অভিযোগ, জগারডাঙ্গার বছর চব্বিশের এক মহিলাকে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এ আবেদন করতে বলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান গণেশ দত্ত।
তাঁকে পঞ্চায়েত অফিসে ডেকে একটি ফর্মে সই করিয়ে নিয়ে আবেদন জানাতে বলা হয়। অথচ, নিয়ম অনুযায়ী ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলারাই ওই প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারেন।
সম্প্রতি ব্লক অফিস থেকে একটি ফোন আসে ওই মহিলার কাছে। জানতে চাওয়া হয়, তিনি ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে’ আবেদন করেছেন কি না। ওই মহিলা প্রথমে ভেবেছিলেন, ব্লক অফিস থেকে ফোন করে জানতে চাওয়া হয়েছে মানেই তাঁর নাম বুঝি নথিভুক্ত হয়ে গেল! পরে তিনি বুঝতে পারেন, ওই প্রকল্পের আওতায় আসার মতো বয়সই হয়নি তাঁর।
ওই মহিলা বলছেন, ‘ব্লক অফিস থেকে ফোন না-এলে আমি এত কিছু জানতেই পারতাম না। প্রধানের কথা মতো আবেদন করেছিলাম। তিনিও আমাকে একটি বারের জন্য নিয়মের কথা বলেননি। বললে আমি কিছুতেই আবেদন করতাম না। কী লজ্জার কথা বলুন তো?’
তাঁর সংযোজন, ‘কিন্তু বিষয়টি জানার পরে আর দেরি করিনি। গড়বেতা ২ বিডিও অফিসে গিয়ে আগের আবেদন বাতিল করার লিখিত আর্জি জানিয়ে এসেছি। নিজেকে কোনও অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত রাখতে চাই না। সবার আগে সম্মান। প্রধান যে কেন আমার সঙ্গে এমনটা করলেন, বুঝতে পারছি না।’
জগারডাঙ্গা ১০ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গণেশ দত্ত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, ‘এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।’ তবে গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বিদ্যুৎ সান্নিগ্রাহী বলেন, ‘একজন মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য আবেদন করেছিলেন। পরে তিনি বুঝতে পারেন, বয়সের ভিত্তিতে এখনও তিনি ওই প্রকল্পের জন্য যোগ্য নন। তারপরে আবেদন বাতিলের জন্য বিডিও অফিসে গিয়েছিলেন।’
গড়বেতা ২ বিডিও দেবঋষি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এ ধরনের কোনও অভিযোগ এলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীনবন্ধু দে বলেন, ‘২৫ বছর বয়স না হলে নিয়ম অনুযায়ী আবেদন বাতিল হয়ে যাবে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার আবেদন বাতিল করা হয়েছে।