পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমের গরম হাওয়ায় থমকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। দক্ষিণবঙ্গে এখনই ঢুকছে না বর্ষা। বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণের কিছু জেলায়। তবে ৩ থেকে ৯ জুন পর্যন্ত আগামী সাত দিন দক্ষিণের জেলাগুলিতে অতিরিক্ত বজ্রপাতের আগাম সতর্কতা জারি করেছে নয়াদিল্লির মৌসম ভবন।
কিউমুলোনিম্বাস বা উলম্ব বজ্রগর্ভ মেঘের কারণে বজ্রপাতের বাড়বাড়ন্ত হবে রাজ্যে। আগামী মঙ্গলবার রাতেও বজ্র গর্ভ উলম্ব মেঘের হাত ধরে কলকাতা বা লাগোয়া কোনও কোনও এলাকায় ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কলকাতার আলিপুরে বৃষ্টি হয়েছে ৩৯.৮ মিলিমিটার। এই প্রবণতা আগামী ৯ জুন পর্যন্ত বহাল থাকতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের তরফ থেকে।
কিউমুলোনিম্বাস বা উলম্ব মেঘের একেকটির আয়তন ১৩ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। একাধিক উলম্ব মেঘ ভূপৃষ্ঠে থাকা মাত্রাতিরিক্ত জলীয় বাষ্পের সংস্পর্শে এসে শেষ পর্যন্ত আর মেঘ হিসেবে আকাশে থাকতে পারে না। ভূমিভাগের দিকে সমান্তরাল ভাবে নেমে আসে এবং প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটায়।
দুই বা তার বেশি উলম্ব মেঘ মাটিতে নামার মুহূর্তে পরস্পরের সঙ্গে ঘর্ষণে বিদ্যুৎ তৈরি করে। মেঘের উচ্চতার উপর নির্ভর করে বজ্রপাতের প্রবণতা বাড়ে। কলকাতায় গতকাল এরকমই শক্তিশালী একাধিক কিউমুলোনিম্বাস মেঘ পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘনঘন বজ্রপাত ঘটিয়েছে। প্রতি মিনিটে শহরের কোথাও ৩ বা কোথাও ৫ বার বজ্রপাত হয়েছে। বজ্রপাতের আগাম সতর্কতা জারি করে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। গতকালও দক্ষিণের ৫ টি জেলার ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত বজ্রপাতের লাল সতর্কতা জারি করেছিল আবহাওয়া দপ্তর।
দেশের মৌসম ভবন ‘দামিনী’ অ্যাপের অ্যালার্ট নোটিফিকেশন অন রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দামিনী অ্যাপ (DAMINI) গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যায়। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটেরিওলজি এবং ভারতীয় আর্থ সায়েন্স অর্গানাইজেশন এই অ্যাপ তৈরি করেছে। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে প্রতি বছর গড়ে ২০০০ মানুষ বজ্রাঘাতে মারা যান।
শহরাঞ্চলে ৪ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চলে ৯৬ শতাংশ মানুষের মৃত্যু ঘটে। দামিনী অ্যাপ ব্যবহারকারীর টাওয়ার লোকেশন যাচাই করে তার ২০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পরিধির মধ্যে ঘটতে চলা বজ্রপাতের আগাম সতর্কতা দেয়। বজ্রপাতের ২০ থেকে ৪০ মিনিট আগে থেকেই অ্যালার্ট দিতে শুরু করে। ২০১৯ সালে এই অ্যাপ তৈরি করা হয়েছিল।