• আদানি-বিদায়, তাজপুরে কি জিন্দল
    আনন্দবাজার | ০৪ জুন ২০২৫
  • তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দরের দরপত্র (টেন্ডার) নতুন করে ডাকা হবে বলে ঘোষণা আগেই করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর সেই বার্তার পরে প্রশাসনের অন্দরে প্রস্তুতি শুরুও হয়। সূত্রের দাবি, তা কার্যকর করেছে রাজ্য। যদিও আগ্রহপত্র দেওয়া হয়েছিল আদানি গোষ্ঠীকে।

    হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের পর থেকে আদানিদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে রাজ্য সরকারের। আদানি গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, রাজ্য সরকার তাদের ‘লেটার অব ইনটেন্ট টু অ্যাওয়ার্ড’ (এলওআইএ) দেওয়ার পরেও ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ বা কাজ শুরুর ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। বরং প্রশ্ন তোলা হচ্ছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ছাড়পত্র না থাকা নিয়ে। যদিও তাজপুরের পরে আরও অনেকগুলি বন্দরের দায়িত্ব পেয়েছে আদানি গোষ্ঠী। ফলে ছাড়পত্র না থাকার কারণে তাজপুর সমুদ্রবন্দরের আগ্রহপত্র কী ভাবে বাতিল হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে কিছু মহল। এ ব্যাপারে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ মহল থেকে সরকারি ভাবে কোনও বার্তা পাওয়া যায়নি। যদিও এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অখিল গিরি দাবি করেছেন, ‘‘দরপত্র পাওয়ার পরে নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে কাজ না করলে চুক্তি খারিজ করার অধিকার রাজ্য সরকারের রয়েছে। রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা রয়েছে বলেই নতুন করে তাজপুর বন্দর নিয়ে দরপত্র ডাকবে বলে ঠিক করেছে।’’

    গত বার আদানির সঙ্গে যে সংস্থা শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছিল, সেই জেএসডব্লিউ গোষ্ঠী সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন টেন্ডার প্রকাশ্যে এলে এই নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তবে সূত্রের খবর, এই বন্দর হাতে নিতে আগ্রহী সজ্জন জিন্দালের গোষ্ঠী। শিল্প দফতরের একটি সূত্রের মতে, বর্তমানে ওই গোষ্ঠীর সঙ্গে রাজ্য সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ চলছে। রাজ্যে তাঁদের একাধিক প্রকল্পের কাজ চলছে। আর তাজপুরের পাশে শালবনিতেও তাঁদের একাধিক প্রকল্প রয়েছে। ফলে এই বন্দর তাদের হাতে যাওয়ার সম্ভাবনা এই মুহূর্তে উজ্জ্বল বলেই ওই সূত্রের দাবি।

    শিল্পমহলের একাংশের বক্তব্য, কেন্দ্রের তরফে জরুরি কিছু ছাড়পত্র না থাকার যুক্তিতে দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে এই দরপত্র রাজ্য বাতিল করেছে। কিন্তু গোপালপুর বন্দরে আদানিদের ছাড়পত্র দিয়েছে ওড়িশা সরকার। কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দরে দু’টি বার্থ পেয়েছে আদানিরা। আবার হলদিয়া ও গুজরাতের কান্দলা বন্দরেও একটি করে বার্থ রয়েছে তাদের হাতে। সেগুলি তাজপুর বন্দর নিয়ে দরপত্রের পরে পাওয়া দায়িত্ব। ফলে গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ মহলের প্রশ্ন, কেন্দ্রের বিধিমতো ছাড়পত্র না থাকলে এগুলিতে তারা কী ভাবে কাজ করছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)