চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা-সহ পাঁচটি মামলায় বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের আবেদন আজ খারিজ করে দিয়েছে আদালত। শুনানির শেষে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটআবু বকর সিদ্দিক এই নির্দেশ দেন।
আজ আদালতে চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী অপূর্বকুমার ঘোষ অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জামিনের আবেদন করেন। তিনি জানান, চিন্ময় দাস সিরোসিস অব লিভারে আক্রান্ত। এর পরেই কারা কর্তৃপক্ষকে বিচারক নির্দেশ দেন, কারা বিধি অনুযায়ী চিন্ময়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। শুনানির পরে অপূর্বকুমার বলেন, ‘‘চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ছাড়াও আইনজীবী হত্যা, পুলিশের উপরে হামলারআরও পাঁচটি মামলা হয়েছে। মামলায় তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। এ সব মামলায় আদালতে জামিন আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে জামিন আবেদননামঞ্জুর করেন।”
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ-উদ্দিন বলেন, ‘‘চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে কোতোয়ালি থানার হত্যা, পুলিশের উপরে হামলা, গাড়ি ভাঙচুর-সহ পাঁচ মামলায় জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে তাঁকে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে দাবি করেন তাঁর আইনজীবীরা। সরকারপক্ষের আইনজীবীরা জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
গত ২৫ অক্টোবর চিন্ময়কৃষ্ণের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। গত ৩১ অক্টোবর তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। সেই মামলায় চিন্ময়কৃষ্ণকে গত ২৫ নভেম্বর ঢাকায় গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন জামিন আবেদন করা হলে তা মঞ্জুর না করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। আদালত চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সেদিন চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুগামীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আইনজীবী সাইফুলইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ।
আদালত সূত্র জানায়, সাইফুল ইসলাম হত্যার অভিযুক্তদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাতে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দু’টি কোপ দেন রিপন দাস। আর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপান চন্দন দাস। পরে রাস্তায় পড়ে থাকা ওই আইনজীবীকে লাঠি, ইট-সহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে ১৫ থেকে ২০ জন কুপিয়ে-পিটিয়ে হত্যা করেছিল।