পুরনো গাড়ি কেনাবেচার ব্যবসা করতে গেলে লাইসেন্স বাধ্যতামূলক, সিদ্ধান্ত পরিবহণ দফতরের
আনন্দবাজার | ০৪ জুন ২০২৫
পুরনো গাড়ি কেনাবেচার ব্যবসা করতে গেলে এ বার থেকে নিতে হবে পরিবহণ দফতরের লাইসেন্স। সম্প্রতি পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একটি বৈঠক আয়োজিত হয়েছিল পুরনো গাড়ি কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। সেই বৈঠকেই জানিয়ে দেওয়া হয়, আগামী জুন মাস থেকে পুরনো গাড়ি কেনাবেচার ব্যবসা করতে গেলে পরিবহণ দফতরের লাইসেন্স বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি ব্যবসার ক্ষেত্রে যে বেশ কিছু নীতি মেনে চলতে হবে, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিবহণ দফতরের তরফে দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকা।
নতুন এই লাইসেন্স পেতে প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে ২৫ হাজার টাকা করে এককালীন আমানত জমা দিতে হবে। পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, পুরনো যাত্রিবাহী বাণিজ্যিক গাড়ি বাস, মিনিবাস, ট্যাক্সি ক্যাব, অটো কেনাবেচার ক্ষেত্রে এই নতুন নিয়ম কার্যকর হবে। পাশাপাশি ওই ব্যবসায়ীদের একটি গ্যারাজ থাকা বাধ্যতামূলক। সঙ্গে গাড়ি রাখার একটি বড় জায়গাও থাকতে হবে। সম্প্রতি পরিবহণ দফতর খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, তাদের কাছে যে তালিকা রয়েছে, তাতে মাত্র ৩৯টি সংস্থা রয়েছে যারা পুরনো গাড়ি কেনাবেচার ব্যবসা করে থাকে। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে কলকাতা শহর তো বটেই, শহরতলি এবং বিভিন্ন জেলায় কয়েক হাজার সংস্থা এই ধরনের ব্যবসা করছে। তার পরেই পরিবহণ দফতরের কর্তারা বৈঠকে বসে বিষয়টি নজরে আনেন পরিবহণমন্ত্রীর। তার পরেই এই নতুন নিয়ম কার্যকর হওয়ার বিষয় সিলমোহর দেয় পরিবহণ দফতর।
পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, এত দিন পুরনো গাড়ি কেনাবেচার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কাছে সঠিক কোনও তথ্য ও হিসাব ছিল না। নতুন এই নিয়ম মানা হলে কোন গাড়ি কোথায় চলাচল করছে, কার মালিকানা বদল হচ্ছে, এই বিষয়গুলির স্পষ্ট হিসাব থাকবে। এ ক্ষেত্রে পরিবহণ দফতরের পোর্টালে যাবতীয় হিসাব-নিকাশ দেওয়া থাকবে। যার ফলে পুরনো গাড়ি নিয়ে যদি কেউ কোনও তথ্য জানতে চান, তা-ও সহজেই জানতে পারবেন। আধিকারিকেরা এ কথা বললেও, পরিবহণ দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পুরনো গাড়ি নিয়ে বহু অপরাধমূলক ঘটনা ঘটে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। সেই সময় প্রকৃত অপরাধীর খোঁজ পেতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশ-প্রশাসনকে। তাই নতুন এই পদ্ধতি চালু হয়ে গেলে গাড়ি হাতবদল করে অপরাধ করার প্রবণতা যেমন কমবে, তেমনই বিভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ- প্রশাসনেরও সুবিধা হবে। পাশাপাশি পুরনো গাড়ি কেনাবেচার ক্ষেত্রে যে রাজস্ব এত দিন পরিবহণ দফতরের হাতছাড়া হত, তা-ও সহজে মিলবে।