বয়স্ক পুরুষ কি সবসময় ভালো প্রেমিক হতে পারেন? গরীব অষ্টাদশী ছাত্রীর মৃত্যুর পিছনেও কি ছিল এই প্রেম? উঠল প্রশ্ন ...
আজকাল | ০৫ জুন ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানা এলাকার দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীর খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য পেল পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান অসমবয়সি এক ব্যক্তির প্রেমে পড়েই খুন হতে হয়েছে সামশেরগঞ্জের বাসিন্দা বছর ১৮র ওই কিশোরীকে। তবে এই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
মঙ্গলবার সকালে মুর্শিদাবাদে রঘুনাথগঞ্জ থানার অন্তর্গত রানীনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাটুপাড়া এলাকার একটি মাঠে ওই কিশোরীর অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু করার পর রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ জানতে পারে সোমবার লস্করপুর এলাকার একটি স্কুলে কন্যাশ্রীর টাকা নিতে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল দশম শ্রেণীর ওই পড়ুয়া। তারপর সে আর বাড়ি ফেরেনি।
সোমবার রাতেই কিশোরীর পরিবারের তরফ থেকে সামশেরগঞ্জ থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার কিশোরীর দেহ উদ্ধারের পর পরিবারের তরফে রঘুনাথগঞ্জ থানায় খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার অমিত কুমার সাউ বলেন ,'এই খুনের ঘটনায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র আমরা পেয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে সেগুলো আমরা প্রকাশ করছি না। গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। '
কিশোরী খুনের ঘটনার এক তদন্তকারী আধিকারিক জানান, সামশেরগঞ্জের যে গ্রামে ওই কিশোরী থাকত সেখানকার এক মহিলার মাধ্যমে রানীনগর গ্রামের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তির সঙ্গে ওই কিশোরীর ফোনে আলাপ হয়।
ওই আধিকারিক জানান , স্ত্রী ছাড়াও প্রাপ্তবয়স্ক ওই ব্যক্তির দুই সন্তান এবং এক কন্যা রয়েছেন। তাঁরা বিবাহিত। তবে পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ওই ব্যক্তি কয়েক মাস আগে নতুন করে ওই কিশোরীর প্রেমে পড়েছিল এবং তারা বিয়ে করার পরিকল্পনাও করেছিল।
পুলিশ সূত্রের খবর ,সামশেরগঞ্জের বাসিন্দা যে মহিলার সঙ্গে কিশোরীর আলাপ হয়েছিল সেই মহিলার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রতিদিন ওই ব্যক্তির সঙ্গে কিশোরীর দীর্ঘক্ষণ ভিডিও কলে কথা হত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে , মৃত কিশোরীর বাবা একজন ছোটখাট ব্যবসায়ী এবং ফেরিওয়ালার কাজ করেন। তাঁর আর্থিক অবস্থা ভালো নয়।
সূত্রের খবর,কেরালায় কর্মরত থাকাকালীন সম্প্রতি ওই ব্যক্তি কিশোরীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এই উদ্দেশ্য নিয়ে গত শুক্রবার সে মুর্শিদাবাদ জেলায় ফিরে আসে। এরপর গত কয়েকদিনে একাধিকবার ফোনে কথা বলে ওই কিশোরী বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে এবং সোমবার সে স্কুলে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়ে তার 'প্রেমিকের' সঙ্গে দেখা করতে যায়।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাণীনগর অঞ্চল সভাপতি খাইরুল ইসলাম বলেন,' ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে গ্রামে থাকে না। তবে মাতাল এবং জুয়াড়ি হিসেবে ওই ব্যক্তির এলাকায় যথেষ্ট দূর্নাম রয়েছে। কীভাবে ওই ব্যক্তির সঙ্গে কিশোরীর সম্পর্ক হয়েছিল আমার জানা নেই। '
এই খুনের ঘটনার তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন,বেশ কিছু তথ্য প্রমান ঘেঁটে তাঁদের অনুমান খুনের ঘটনার কিশোরীর প্রেমিক ওই ব্যক্তি ছাড়াও আরও দু'জন ব্যক্তি জড়িত রয়েছে। তবে কী কারণে শেষপর্যন্ত ওই কিশোরীকে খুন করা হয়েছে তা এখনও পরিষ্কার নয়।