যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সংসদের ঘর ভাঙচুর! তাণ্ডবের ঘটনায় অভিযোগ কর্তৃপক্ষের কাছে
আনন্দবাজার | ০৪ জুন ২০২৫
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সংসদের ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে অভিযোগ পড়ুয়াদের। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পড়ুয়াদের সন্দেহ মঙ্গলবার রাতে কেউ বার কারা এই তাণ্ডব চালিয়েছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার রাতের ওই তাণ্ডবের ঘটনায় যাদবপুর থানায় অভিযোগ জানানোর জন্যও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন তাঁরা।
ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সংসদের ওই ঘরটির কাছাকাছি কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। ঘরটি সারা রাত খোলাই থাকে। সূত্রের খবর, ওই ঘরে তালা দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। বুধবার সকালে ছাত্র সংসদের ঘরে ভাঙচুরের বিষয়টি পড়ুয়াদের নজরে আসে। ছাত্র সংসদের ঘরের লন্ডভন্ড অবস্থা ছিল সেই সময়। কিন্তু কে বা কারা, এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে, তা তখনও স্পষ্ট ছিল না। এই অবস্থায় পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার নম্বর গেটের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখতে চান কর্তৃপক্ষের কাছে। কারণ, ওই গেটটিই সারা রাত খোলা থেকে। সেখানে নিরাপত্তাকর্মীও থাকেন। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তারক্ষী এবং সিসি ক্যামেরা থাকার পরেও কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পড়ুয়ারা।
ওই সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এক যুবককে ক্যাম্পাস থেকে বেরোতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি পড়ুয়াদের। পড়ুয়াদের সন্দেহ, ওই যুবক মত্ত অবস্থায় ছিলেন। পড়ুয়াদের কারও কারও দাবি, ওই যুবক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত। ওই যুবক ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত থাকতে পারেন বলে সন্দেহ করছেন পড়ুয়াদের একাংশ। যদিও ছাত্র সংসদের তরফে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগে কোনও সংগঠনের কথা উল্লেখ নেই। তবে সমাজমাধ্যমে ছাত্র সংসদের এক বিবৃতিতে সাম্প্রতিক ঘটনাক্রমের কথা উল্লেখ করে তৃণমূল এবং বিজেপি উভয়কেই একযোগে নিশানা করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্র দেবার্ঘ্য যশ বলেন, “এটি কর্তৃপক্ষের গাফিলতি। রাতের অন্ধকারে কে বা কারা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করছে, সেটি নিরাপত্তাকর্মীর দেখার দায়িত্ব। শুধু সিসি ক্যামেরা লাগিয়েই নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা যায় না, তার একটি উদাহরণ এটি। আমরা এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত নই কে বা কারা এটি করেছে। যারা বারবার অগণতান্ত্রিক ভাবে গায়ের জোরে যাদবপুর দখলের কথা বলে, স্বভাবতই গত রাতের ঘটনার পরে সন্দেহের তীর তাদের দিকেই।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি কিশলয় রায় বলেন, “এই সব অভ্যাস তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেই। ওদের কাছে কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। এর পরেও যদি আমাদের সংগঠনের নাম আসে, তখন আমরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হব।”
মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্তের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। তিনি সেই সময় ক্যাম্পাসে ছিলেন তিনি। সহ-উপাচার্য বলেন, “আমি শুনেছি এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। রেজিস্ট্রার পুরো বিষয়টি দেখছেন। কী বা কেন ঘটল, তা আমরা তদন্ত করে দেখব।”