• অনুব্রতর অডিও বিতর্ক: বোলপুর থানার আইসির বাজেয়াপ্ত মোবাইল, শুরু বিভাগীয় তদন্ত
    প্রতিদিন | ০৫ জুন ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বীরভূম জেলার প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের হুমকি ফোন কাণ্ডে বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারের বিরুদ্ধে শুরু বিভাগীয় তদন্ত। তাঁর বিরুদ্ধে বালি, পাথরের চোরাকারবারিদের সঙ্গে যোগসাজশ ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। পাশাপাশি অডিও কাণ্ডে ব্যবহৃত তাঁর ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ জানান, “যা যা অভিযোগ পেয়েছি, সবকিছুর বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।” অনুব্রতর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, ওই ফোনের গলা আসলে অনুব্রতর নয়। এআই প্রযুক্তির কৌশল।

    এদিকে, অনুব্রতর মেডিক্যাল সার্টিফিকেট নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। মেডিক্যাল সার্টিফিকেটটি দেওয়া হয়েছে, অনুব্রত ‘ঘনিষ্ঠ’ মলয় পিটের শান্তিনিকেতন মেডিক্যালের তরফে। এবং সেটিতে সই করেছেন জনৈক চিকিৎসক এইচ চৌধুরী। কিন্তু তিনি যে আসলে কে তা নিয়ে ধন্দ কাটাতে সেখানকার দুই কর্মীকে পুলিশ জেরা করলেও কিছুই খোলসা হয়নি। আবার পুলিশকে হুমকি এবং জেরার জন্য হাজিরায় ডাকলে তা এড়ানোয় কেষ্ট যে কতখানি প্রভাবশালী, ফের সেই তত্ত্ব খাড়া করতে তৎপর সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি জানতে চাইতে পারে বীরভূম পুলিশের কাছে।

    গত রবিবার অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী বিজয় ভট্টাচার্য প্রেসক্রিপশন জমা দিয়ে জানিয়েছিলেন তিনি অসুস্থ, তাঁর বিশ্রামের প্রয়োজন। সেই প্রেসক্রিপশনে সই করা চিকিৎসক এইচ চৌধুরীর পরিচয় নিয়ে ধন্ধ দেখা দেয়। তিনি ঠিক কে, শেষ কবে অনুব্রতকে চিকিৎসার প্রয়োজনে দেখেছেন, তা জানতে বোলপুরের ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দুই কর্মীকে পুলিশ দপ্তরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই কলেজের কর্ণধার মলয় পিট ফোনে জানান, “আমি বাইরে রয়েছি। ফলে কোন সার্টিফিকেটে কে সই করেছেন তা না দেখে, না জেনে কিছুই বলতে পারব না।”

    অসুস্থতার কারণে আদালতে হাজিরা না দেওয়াকে কেন্দ্র করে সিবিআই তদন্তের সময়ও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন অনুব্রত মন্ডল। সূত্রের খবর, এবারও এইচ চৌধুরীর সইয়ে যে চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়া হয়েছে তিনি রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার ব্লক মেডিক্যাল অফিসার। স্বভাবতই পুলিশ মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, একজন সরকারি চিকিৎসক কি করে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের প্যাডে সই করেন। যদিও সেই স্বাস্থ্য আধিকারিক এইচ চৌধুরী জানান, ওই রেজিস্ট্রেশন নম্বর তাঁর নয়। যদিও রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের ওয়েবসাইটে ওই নম্বরে চিকিৎসক ‘হিটলার চৌধুরীর’ নাম নথিভুক্ত আছে। সিবিআই সূত্রের দাবি, অনুব্রত মণ্ডল গরুপাচার মামলায় জেল খেটেছেন। ওই পাচার মামলায় অনুব্রতর সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে বেশ কয়েকবার শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের কর্ণধার মলয় পিটকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। এবার থানার আইসিকে হুমকি এবং জেরা এড়াতে সেই মলয়ের সংস্থার সার্টিফিকেট ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। সিবিআই গরুপাচার মামলায় সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলছে। জানতে চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের কেউ বা কারা কোনও হুমকি দিয়েছেন কিনা। হুমকি দিলে তাদের জানাতে বলা হয়েছে। এবং জেলা পুলিশের কাছেও পুরো বিষয়টি জানতে চাইতে পারে বলে খবর।
  • Link to this news (প্রতিদিন)