সম্যক খান, মেদিনীপুর: রাত হয়ে গেলেও বাড়ি ফেরেনি মহিষ। পরে মহিষটি ফিরে এলেও বাড়ি ফেরা হল না বাড়ির বড় ছেলের। মহিষটিকে খুঁজতে বেরিয়ে হাতির আক্রমণে প্রাণ গেল এক ব্যক্তির। আহত হয়েছেন তাঁর ভাই। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে শালবনীর মহুলবনিতে।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত ব্যক্তির নাম বঙ্কিম মাহাতো। বয়স ৫২ বছর। তিনি শালবনীর মহুলবনির বাসিন্দা। দুই ভাইয়ের মোট চারটি মহিষ আছে। সবকটিই চাষের কাজেই লাঙল করতে ব্যবহৃত হত। গতকাল সন্ধ্যার পর তিনটি মহিষ মাঠ থেকে বাড়ি ফিরে এলেও একটি মহিষ আসেনি। রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত গোয়ালঘরে ফিরে না আসায় বাধ্য হয়েই তাকে খুঁজতে বের হন দুই ভাই। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন,মঙ্গলবার রাত প্রায় পৌনে দশটা নাগাদ নিজেদের বাড়ির মহিষ খুঁজতে বেরন দুই ভাই বঙ্কিম ও কালিপদ মাহাতো।
এলাকার কৃষিজমিগুলিতে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তাঁরা। কিন্তু ওই এলাকায় দলছুট একটি দাঁতাল ঘুরছে তা তাঁরা জানতেন না। মহিষ খোঁজার সময় হঠাৎ তাঁদের পেছন থেকে আক্রমণ করে হাতিটি। শুঁড়ে ধরে আছাড় মারা হয়। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। হাতিটিকে তাড়িয়ে দুই ভাইকে উদ্ধার করে প্রথমে শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বঙ্কিম মাহাতোকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। গুরুতর আহত কালিপদ মাহাতকে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় রাতেই। এত কিছুর মাঝে রাতে জানা যায়, যাকে খুঁজতে বেরিয়ে প্রাণ গেল বঙ্কিমের সেই মহিষটি ফিরে এসেছে।
বনদপ্তরের আড়াবাড়ি রেঞ্জ আধিকারিক বাবলু মাণ্ডি বলেন,”খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। দুই ভাই যখন মহিষটিকে খুঁজতে বেরিয়েছিলেন তখন তাদের হাতে বড় সার্চ লাইটও ছিল। তাও কিভাবে তারা হাতিটিকে দেখতে নাগাল পেলেন না সেটাই আশ্চর্যের। হাতিটি তাদের পেছন থেকে আক্রমণ করেছে বলে জানা যাচ্ছে।” সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মৃত ব্যক্তির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে বনদপ্তর।