নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা কালিয়াচক: তিন কুখ্যাত অপরাধীকে ধরতে নাকা চেক পয়েন্টে আটঘাট বেঁধে অপেক্ষা করছিল পুলিস। গুলি চালিয়ে পালানোর সময় জালে পড়ল দু’জন। একজনের খোঁজে চলছে চিরুনি তল্লাশি। মঙ্গলবার রাতে বৈষ্ণবনগরে এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে অসমের দুই ওয়ান্টেডকে। তাদের বিরুদ্ধে সেই রাজ্যে ১৭টি মামলা রয়েছে। ধৃতরা আন্তঃরাজ্য গাড়ি পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে বলে সন্দেহ পুলিসের। ধৃত কামরূপের বালিহাটার বাসিন্দা ধর্মেশ্বর রায় ও অঞ্জন কালিতাকে বুধবার আদালতে পেশ করে তিনদিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিস।
মালদহের পুলিস সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, গাড়িতে তিনজন অপরাধী থাকতে পারে বলে খবর ছিল। সেই মতো নাকা চেকিং করে তাদের আটক করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু দু’জন পুলিসের উপর গুলি চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। ধাওয়া করে তাদের ধরা হয়েছে।
পুলিস, প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কন্ট্রোল রুমে খবর আসে গাড়ি পাচারকারীরা একটি গাড়িতে পালাচ্ছে। তখন মালদহ পুলিসকে একটি গাড়ির নম্বর দেওয়া হয়। জানানো হয় গাড়ির রং এবং যাবতীয় বিবরণ। বলা হয় ওই গাড়িতে তিনজন রয়েছে, যারা অসম পুলিসের ১৭টি মামলায় ওয়ান্টেড। রাজ্য পুলিসের উপরমহলের পাশাপাশি জেলা পুলিসের সঙ্গে এনিয়ে যোগাযোগ করে অসম পুলিসও।
খবর আসতেই গাড়ি সহ তিন ব্যক্তিকে ধরতে তোড়জোড় শুরু করে মালদহ পুলিস। কন্ট্রোল রুম থেকে খবর যায় বৈষ্ণবনগর থানায়। সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার একটি টিম পৌঁছে যায় ১৭ মাইলের টোলপ্লাজার কাছে। শুরু হয় নাকা চেকিং। সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত বাড়তে থাকে। মালদহের দিক থেকে দ্রুতগতিতে একটি গাড়ি আসতে দেখে সতর্ক হয়ে যান কর্তব্যরত পুলিসকর্মীরা। গাড়িটি কাছে আসতেই কন্ট্রোল রুম থেকে দেওয়া বিবরণের সঙ্গে হুবহু মিল পান তাঁরা। টর্চ জ্বালিয়ে হাত দেখিয়ে গাড়ি থামাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু গাড়ির গতি কমানো হয়নি। ততক্ষণে পুলিসকর্মীরা বুঝে যান পালানোর মতলব রয়েছে পাচারকারীদের। গার্ডরেল দিয়ে গাড়িটি আটকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় পুলিস। কর্তব্যরত পুলিসকর্মীদের ধাক্কা মেরে গাড়িটি ফারাক্কার দিকে চলে যায়। তবে চাকা ফেটে যাওয়ায় গাড়ি ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করে তিন দুষ্কৃতী। পুলিস ধাওয়া করলে তারা তিন রাউন্ড গুলি চালায় বলে খবর। তাতে অবশ্য পিছিয়ে যাননি পুলিসকর্মীরা। দু’জনকে ধরে ফেলেন তাঁরা। অন্যজনের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিসের কাজে বাধা, গুলি ছোড়া সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে বৈষ্ণবনগর থানার পুলিস।