সরকারি বিএড কলেজের জমিতে ব্যারিকেড তুলে তৈরি ‘খেলার মাঠ’
বর্তমান | ০৫ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, মালদহ: রাজ্য সরকারের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজের হস্টেলের জমি ঘিরে তোলা হচ্ছে ব্যারিকেড। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া হুঁশিয়ারির পরেও সরকারি জমি ঘিরে ‘খেলার মাঠ’ তৈরির ক্ষেত্রে ইংলিশবাজার পুরসভার এক তৃণমূল কাউন্সিলারের যুক্তি নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। গভর্নমেন্ট টিচার্স ট্রেনিং কলেজের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সাফ জানিয়েছেন, এভাবে সরকারি জমি ঘিরে ফেলা যায় না। পুরো বিষয়টির আইনি অনুমোদন নেই। উচ্চশিক্ষা দপ্তরের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরের দ্বারস্থ হতে চলেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সরকারি জমি দখল রুখতে মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট ও প্রকাশ্য হুঁশিয়ারির পরেও কীভাবে ইংলিশবাজার পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা চলছে, তা নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে জেলা প্রশাসনও। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলার মনীষা সাহা মণ্ডলের বক্তব্য, ওই জমিতে কিছু মাদকাসক্তের আনাগোনা শুরু হয়েছিল। সেটি রুখতেই স্থানীয় বাসিন্দারা বাচ্চাদের খেলার জন্য পরিচ্ছন্ন করে ওই মাঠটিকে উপযোগী করে তুলেছেন। রাতে খেলাধুলোর জন্য আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মালদহের সরকারি বিএড কলেজের হস্টেল রয়েছে ইংলিশবাজার পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডে। সরকারি ওই জমিতে রয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের উত্তরাঞ্চলীয় দপ্তরও। গভর্নমেন্ট টিচারর্স ট্রেনিং কলেজের অফিসার ইনচার্জ কার্তিকচন্দ্র সরকার বলেন, সম্প্রতি জানতে পেরেছি ওই ৩.৯৬ একর জমির একাংশে লোহার ব্যারিকেড খাড়া করা হয়েছে। সরকারি জমিতে লিখিত অনুমতি ছাড়া এই ধরণের কার্যকলাপ বেআইনি। আমি ইতিমধ্যে স্থানীয় কাউন্সিলারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানাতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা শুরু হতেই আসরে নেমে পড়েছে বিরোধী দল বিজেপি ও সিপিএম। সিপিএমের জেলা সম্পাদক কৌশিক মিশ্র বলেন, আগেও খেলার মাঠ দখল করে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়তে গিয়ে আমাদের আন্দোলনের চাপে পিছু হঠতে হয়েছিল পুরসভাকে। ওই ব্যারিকেড খুলে সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
মালদহ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলছেন সরকারি জমি দখল করা যাবে না। আবার মালদহের ইংলিশবাজারে তাঁর দলের কাউন্সিলারের মদতেই সরকারি শিক্ষক শিক্ষণ কলেজের হস্টেলের জমি দখলের চেষ্টা চলছে। এর শেষ দেখে ছাড়ব।
ইংলিশবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, যতটুকু জানি, ওই সরকারি জমিটিতে সাপের উপদ্রব হচ্ছিল। অনেকে আবর্জনাও ফেলছিলেন। এলাকার ছেলেরা মাঠটি পরিস্কার করে খেলার উপযোগী করেছেন। এটি মাঠ ঘেরা বা দখল করা নয়। নিজস্ব চিত্র