নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সিউড়ি থানায় হাজিরা দিলেন বহিষ্কৃত তৃণমূল ছাত্র নেতা বিক্রমজিৎ সাউ। পুলিস সূত্রে খবর, বুধবার সকালে (আনুমানিক ৬টা নাগাদ) তিনি থানায় হাজির হয়েছিলেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় তাঁকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ৮টা নাগাদ বিক্রমজিৎ থানা চত্বর ছেড়ে বেরিয়ে যান। তবে, তদন্তের প্রয়োজনে ফের বিক্রমজিৎকে তলব করা হতে পারে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। এক পুলিস আধিকারিক জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসা বিক্রমজিতের বয়ান মিলিয়ে দেখা হবে। তাঁর বক্তব্যে কোনও অসঙ্গতি ধরা পড়লে ফের একবার তাঁকে নোটিস করে তলব করা হবে। প্রয়োজনে তাঁর মোবাইল ফোনটিও বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে।
বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে ফোনে হুমকি কাণ্ডে অডিও ভাইরাল হতেই বিপাকে পড়তে হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। অস্বস্তিতে পড়তে হয় রাজ্যের শাসকদলকেও। এই পরিস্থিতিতে শুরুতেই অনুব্রতর পাশে দাঁড়িয়ে ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে কার্যত একই সুরে আইসিকে হুমকি দিয়েছিলেন বিক্রমজিৎ। যদিও তড়িঘড়ি সেই লাইভ ভিডিওটি তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ডিলিট করে দিয়েছিলেন। শেষ রক্ষা অবশ্য হয়নি। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই দল তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতির পদ খোয়াতে হয় তাঁকে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে তাঁকে ছ’বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। অন্যদিকে, আইসিকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় বিক্রমজিতের বিরুদ্ধে পুলিস স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে। তাঁর বিরুদ্ধে ১৩২, ৩৫১(২) এবং ২২৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পাশাপাশি সোমবারই পুলিস তাঁকে নোটিস পাঠায়।
এদিন সকাল ১০টা নাগাদ তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। সেই মোতাবেক বিক্রমজিৎ এদিন থানায় হাজিরা দেয়। যদিও নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই তিনি হাজিরা দিতে থানায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে বিক্রমজিতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন বন্ধ থাকায় তা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে, তাঁর পরিবারের তরফেও তেমন কিছু জানা যায়নি। পুলিসকে নিশানা করে বিক্রমজিতের হুমকির ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করেছেন তাঁর বাবা বিদ্যাসাগর সাউ। তিনি সিউড়ি পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার। তিনি বলেন, ‘বিক্রমজিৎ দিন কয়েক বাড়িতে নেই। তাঁর সঙ্গে কোনও প্রকার যোগাযোগও নেই। তবে, সংবাদমাধ্যম থেকে জেনেছি, এদিন থানায় হাজিরা দিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করছে। কিন্তু কখন গিয়েছিল তা জানা নেই। তবে আশা ছিল, তদন্তে সহযোগিতা করবে। তাঁর আরও সংযোজন, ওর কাছে এসব আশা করিনি। এগুলো ওর বলা উচিত ছিল না। আমাদের খারাপ লেগেছে। আমরা পরিবারের তরফে ছেলেকে সুশিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম।’ ফাইল চিত্র