সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতে বিদ্যুৎহীন বহু গ্রাম, ময়ূরেশ্বরের কলেশ্বরে পথ অবরোধ
বর্তমান | ০৫ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: তীব্র গরমে টেকা দায়। তারই মধ্যে কোথাও ঘনঘন লোডশেডিং, কোনও এলাকা আবার রাতভর বিদ্যুৎহীন। সামান্য ঝড়বৃষ্টিতেই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। পরিষেবা স্বাভাবিক হতে লেগে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সবথেকে সমস্যা শিশু ও বৃদ্ধদের। গত মঙ্গলবারও রাতভর বিদ্যুৎহীন ছিল ময়ূরেশ্বরের একাধিক গ্রাম। প্রতিবাদে বুধবার সকালে কলেশ্বরের শিবমন্দিরের কাছে পথ অবরোধ করেন ভুক্তভোগীরা। প্রায় ঘণ্টা তিনেক ধরে চলে অবরোধ। পরে পুলিসের আশ্বাসে অবরোধ উঠলেও বিদ্যুৎ দপ্তরের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে মানুষ। ঘনঘন লোডশেডিং গরমের দোসর হওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ময়ূরেশ্বরের জনজীবন। মানুষ অতিষ্ঠ। পাশাপাশি পাম্প চালাতে না পারায় বাড়ছে পানীয় জলের সমস্যা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটায় বিদ্যুৎ চলে যায়। গোটারাত অন্ধকারে ডুবে থাকে গ্রামের পর গ্রাম। গরমে জেগে রাত কাটাতে হয় মানুষকে। অবস্থা সহ্যের বাইরে চলে যাওয়ায় বুধবার সকালে কলেশ্বর থেকে লোকপাড়া যাওয়া রাস্তার শিবমন্দিরের কাছে অবরোধ করেন বাসিন্দারা। কলেশ্বরের বাসিন্দা প্রবোধ দাঁই বলেন, প্রচণ্ড রোদ, গরমে ঘরে বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। এর মধ্যে মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ হয়েছে ঘন ঘন লোডশেডিং। দিন কয়েক ধরে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতে ঝড় শুরু হতেই বিদ্যুৎ চলে যায়। তারপর সারারাত আসেনি। শিশু থেকে বয়স্ক কারও ঘুম হয়নি। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছি।
কলেশ্বর, কলসিহাট, ধানগড়া, কেশেরহাট সহ আশোপাশের গ্রামের আন্দোলনকারীরা বলেন, গরমে টেকা যাচ্ছে না। তার উপরে মশার অত্যাচার। ফ্যান চললে খানিকটা স্বস্তি মেলে। কিন্তু বিদ্যুৎ থাকছে না। পাম্প চালানো যাচ্ছে না। জল পাচ্ছি না। রাতের পর রাত ঘুম নেই।
এদিন অবরোধের জেরে আটকে পড়ে বহু যানবাহন। তীব্র যানজট হয়। দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। প্রায় ঘণ্টা তিনেক অবরোধ তুললেও বিদ্যুৎ দপ্তরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ কমেনি মানুষের। বিদ্যুৎ বন্টন নিগমের ময়ূরেশ্বরের কোটাসুর স্টেশন ম্যানেজার বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, রাতের ঝড়ে সমস্ত লাইন অফ হয়ে গিয়েছিল। মেইনটেন্সেট টিম বের হয়েছিল, কিন্তু ওই এলাকার ১১ হাজার লাইনে সমস্যা থাকায় মেরামত সম্ভব হয়নি। ফলে ওই এলাকা বন্ধ রেখে রাত একটা নাগাদ বাকি এলাকায় পরিষেবা চালানো হয়। সকালেও টিম বেরিয়েছিল। এরই মধ্যে ওই এলাকার মানুষ পথ অবরোধ করেন। তাতে মেইনটেন্সের গাড়িও আটকে পড়ে। অবশেষে দুপুর নাগাদ ওই এলাকারও পরিষেবা স্বাভাবিক করা গিয়েছে। কিন্তু সামান্য ঝড়বৃষ্টিতেই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে কেন? ম্যানেজার বলেন, এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। ময়ূরেশ্বর এলাকা অনেক বড়। অনেক দূর দূর ১১ হাজারের লাইন। একটাই মাত্র সাবস্টেশন। এই এলাকার ষাটপলশার বারগ্রামে আরও একটা সাবস্টেশন তৈরির চেষ্টা চলছে। সেটা হলে এই সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে। উল্লেখ্য, গত ১৪ মে লোকপাড়ায় একই অভিযোগে পথ অবরোধ করেন এলাকার মানুষ।