নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: গোঘাটের কোটা এলাকায় উদ্ধার হওয়া কঙ্কাল নিখোঁজ বধূ বছর ঊনচল্লিশের শ্যামলী সাঁতরার বলে অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছে পুলিস। তাই বধূকে খুনের অভিযোগে তাঁর স্বামী মন্টু সাঁতরা ও শাশুড়ি লাবণ্য সাঁতরাকে গ্রেপ্তার করল গোঘাট থানার পুলিস। মৃতার বাপেরবাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে স্বামীকে এবং বুধবার সকালে শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়। যদিও মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় পুলিস। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে উদ্ধার হওয়া কঙ্কাল ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হচ্ছে। সেখান থেকে রিপোর্ট এলে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে পুলিস। বুধবার ধৃতদের আরামবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বধূর স্বামীকে সাতদিনের পুলিসি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। হুগলি গ্রামীণ পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, এই ঘটনায় সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিখোঁজের দিন বধূকে কেউ দেখেছিল কি না তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তার স্বামীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ মে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন গোঘাটের কোটা এলাকার বাসিন্দা শ্যামলী। চারিদিকে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। চলতি সপ্তাহে গত সোমবার কোটার দলকার জলায় মাথার খুলি, হাড়গোড় সহ পচাগলা দেহের অংশ দেখতে পাওয়া যায়। স্থানীয় এক চাষি জমিতে কীটনাশক দিতে গিয়ে সেটি দেখতে পান। পরে পুলিস খবর পেয়ে তা উদ্ধার করে নিয়ে এসে আরামবাগ মেডিক্যালের মর্গে পাঠায়।
পুলিস জানিয়েছে, কঙ্কালের সামনে পড়ে থাকা শাড়ি, জুতো দেখে বধূকে শনাক্ত করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। যদিও দেহের অবশিষ্টাংশ কিছুই পাওয়া যায়নি। শিয়ালে খুবলে খেয়ে নিয়েছে বলেই অনুমান। শুধু মাথার খুলি ও হাড়গোড় উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাই এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে কলকাতায় ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে। একইসঙ্গে পরিচয় নিশ্চিত হতেও প্রয়োজনীয় তদন্ত করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই এই প্রক্রিয়া হবে। ইতিমধ্যেই বধূর বাপেরবাড়ির তরফে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। যদিও অভিযুক্তরা পুলিসের কাছে খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার বাপের বাড়ির তরফে স্বামী সহ তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করা হয়েছে। বিগতদিনে বধূকে তাঁর স্বামী মারধর করত বলে অভিযোগ। ফলে তাঁকে খুন করে দলকার জলায় দেহ ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করে অভিযোগ জানানো হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনার পর ছেলে তাঁর মাসির বাড়িতে রয়েছে। বধূর ভাই খানাকুলের ছত্রশালের বাসিন্দা সোমনাথ দলুই বুধবার বলেন, দিদিকে বিনা কারণে অত্যাচার করত জামাইবাবু ও তার বাড়ির লোকজন। একবার মাথায় মেরেছিল। আমাদের অনুমান, দিদিকে মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। পুলিস ওদের শাস্তির ব্যবস্থা করুক। নিহত বধূর ফাইল চিত্র