পাড়ার ব্যবসায়ীকে দোকান থেকে অপহরণ, পুলিসের জালে ১০ জন
বর্তমান | ০৫ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: পুরুলিয়ার পাড়া থানা এলাকার এক ব্যবসায়ীকে দোকান থেকে অপহরণ করার ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে পুলিস ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। অপহরণে ব্যবহৃত একটি চার চাকা গাড়ি আটক করা হয়েছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের প্রত্যেকের বাড়ি ঝাড়খণ্ডে। তাদের বুধবার রঘুনাথপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিস হেফাজত মঞ্জুর করেন। বাকিদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। অন্যদিকে অপহৃত ব্যক্তিকেও আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁকে পরিবারের হাতে তুলে দেন। অভিযোগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আন্তরাজ্য অপহরণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বড় সাফল্য পেল জেলা পুলিস। জানা গিয়েছে, ওইদিন রাতেই ব্যবসায়ীর ছেলে অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনের নামে থানায় অপহরণের অভিযোগ করেন। রঘুনাথপুর এসডিপিও রোহেদ শেখ বলেন, ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঠিক কী জন্য ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়েছিল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যবসায়ী পাড়া থানা এলাকার বৈশ্যকুলি গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর আনাড়া বাজারে একটি হার্ডওয়ারের দোকান রয়েছে। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার ওই ব্যবসায়ী নিজের দোকানে বসেছিলেন। বিকেল ৫টার দিকে একটি কালো রঙের চার চাকা গাড়ি পুরুলিয়া দিক থেকে আনাড়া বাজারে আসে। গাড়িটি ওই ব্যবসায়ীর দোকানের সামনে রাখা হয়। তারপর গাড়ি থেকে সাত-আট জন বেরিয়ে এসে ব্যবসায়ীকে গাড়িতে তোলে। গাড়িটি আবার পুরুলিয়ার অভিমুখে রওনা দেয়। অপহরণের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীর ছেলে পাড়া থানার পুলিসকে বিষয়টি জানান। জানার পরেই পুলিস তৎপর হয়। জেলা পুলিসের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অপহরণে ব্যবহৃত গাড়িটিকে চিহ্নিত করা হয়।
জেলার প্রতিটি থানায় গাড়িটির বিবরণ পাঠানো হয়। জেলাজুড়ে বিশেষ নাকা তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। পুলিস জানতে পারে, গাড়িটি পুরুলিয়া শহর পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডের দিকে যাচ্ছে। তাই তুলিন থানা (আউট পোস্ট) বিশেষ তল্লাশি অভিযান চালায়। নাকা তল্লাশিতে গাড়িটি ধরা পড়ে। গাড়ির ভিতর থাকা ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে পাড়া থানার পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
পাশাপাশি অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পুলিস জানিয়েছে,ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে ধৃতদের টাকা লেনদেন নিয়ে কোনও গোলমাল আছে। ব্যবসায়ী টাকা নিয়ে ফেরত দেননি বলে জানা যাচ্ছে।
তার জন্যই অপহরণ। তবে ওই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়া হতো, নাকি অন্য কিছু করা হতো তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগকারী ব্যবসায়ীর ছেলে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তিনি বলেন, অভিযোগ জানিয়েছি। পুলিস সঠিক তদন্ত করুক।