দুষ্কৃতীদের কি অস্ত্র ভাড়া দিত পানিহাটির নেপালি? জেরা করে উত্তর খুঁজছে পুলিস
বর্তমান | ০৫ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: ঘরে বেশ কয়েক বছরের পুরনো বিভিন্ন মডেলের পাইপগান রাখা রয়েছে। এখনও জেল্লা দিচ্ছে সেগুলি। সঙ্গে বিভিন্ন বোরের কার্তুজ। গাড়ি ও বাড়ি ভাড়া দেওয়ার পাশাপাশি পানিহাটির নেপালি কি ভাড়ায় অস্ত্রের ব্যবসায়ও চালাত? কামারহাটি ও পানিহাটির সীমানাবর্তী মৌলানা সেলিম রোডের নইম আনাসারি ওরফে নেপালির বাড়িতে অস্ত্র ভাণ্ডার উদ্ধার হওয়ার পর এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি ভিন রাজ্য থেকে অস্ত্র এনে সে বিক্রি করত কি না,
তাও খতিয়ে দেখছে পুলিস। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে নেপালির বাড়ি থেকে চারটি পাইপগান, ১৩ রাউন্ড গুলি, চপার, কুঠার ও তলোয়ার উদ্ধার হয়েছে। সেইসব অস্ত্র দেখে মনে হবে, হয়তো সেগুলি নতুন। সবকটিই চকচক করছে। মরচের নামগন্ধ নেই। তদন্তকারীরা বলছেন, ওইসব অস্ত্র কমপক্ষে পাঁচ বছরের পুরনো। সূত্রের খবর, এই অস্ত্রগুলি অনেকদিন ধরেই নেপালির কাছে রয়েছে। এই চক্রে তার এক নিকট আত্মীয় সহ অনেকের যোগ রয়েছে। শাসকদলের ছত্রছায়ায় থেকে সে এইসব অস্ত্র ভাড়ায় দিত। তার আবার গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা ছিল। বাড়িতে বেশ কয়েকটি ভাড়াটিয়া পরিবার রয়েছে। নেপালি স্থানীয় ‘মাতব্বর’ হওয়ায় অনেকেই তার বাড়িতে আসত। কিন্তু তলে তলে চলা অস্ত্রের কারবার সম্পর্কে টের পায়নি কেউ। ভাড়ার গাড়িতে করেই অস্ত্র লেনদেন করা হতো। নেপালির দোতলা বাড়ির নীচে ওয়েল্ডিংয়ের কারখানা রয়েছে। ওই কারখানা সাধারণ মানুষ ও পুলিসের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য হতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ওই ওয়েল্ডিং কারখানায় কখনও অস্ত্র তৈরি বা অ্যাসেম্বল করা হতো কি না, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
অন্যদিকে, সোর্স মারফত তদন্তকারীরা জেনেছেন, ভিন রাজ্যের এক আত্মীয় সম্প্রতি তার বাড়িতে এসেছিল। তার মাধ্যমে কি কোনও অস্ত্র আনা হয়েছে? এই প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজছে পুলিস। মঙ্গলবার রাতে খড়দহ থানায় নেপালিকে দীর্ঘক্ষণ জেরার পর পুলিস কমিশনার অজয় ঠাকুর বলেন, এলাকায় কোথাও অস্ত্র মজুত রয়েছে কি না, সে বিষয়ে খোঁজখবর নিতে গিয়েই এই অস্ত্র ভাণ্ডারের খোঁজ মেলে। কোথা থেকে অস্ত্র আনা হয়েছে, কী কারণে আনা হয়েছে, সব দিকই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।