• পুকুর সংস্কারের সময় মিলল কেউটের ৩০টি বাসা!
    বর্তমান | ০৫ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বহু বছর ধরে পুকুরের সংস্কার হয়নি। ফলে, প্রতিমা বিসর্জনের পর সেই মাটি জমে জমে গভীরতা হারিয়েছিল জলাশয়। সেই সঙ্গে ভেঙেছে পাড়। আশপাশের বাসিন্দারা আবর্জনা ফেলায় বুজে আসছে পুকুরের পাড়। পূর্ব পুঁটিয়ারির ইটখোলা এলাকার সেই পুকুর অনেকটাই মজে গিয়েছিল। নতুন করে সেই পুকুরের মাটি কাটতে গিয়ে উদ্ধার হল কেউটের বাসা! তাও একটি বা দু’টি নয়। প্রায় ৩০টি বিষধর সাপের বাসার দেখা মিলেছে। ফলে জেসিবি দিয়ে সাবধানে কাটতে হয়েছে জলাশয়ের মাটি। কুঁদঘাট অঞ্চলের ইটখোলা ১ এবং ২ নম্বরে দু’টি পুকুর নতুন করে কাটা হচ্ছে। নোংরা-আবর্জনা, নির্মাণ বর্জ্য (রাবিশ) পড়ত সেখানে। আগাছার জঙ্গল, পলি জমে কয়েক একর জমি নিয়ে থাকা এই বড় জলাশয় নিজের চরিত্র হারাচ্ছিল। এবার সেই পুকুর ফিরছে নতুন রূপে। টলটল করবে জল। চারপাশে তৈরি হবে পায়ে চলার রাস্তা। থাকবে বসার জায়গা। বসবে সৌর বাতিস্তম্ভ।  

    কুঁদঘাট মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে খালের ওপারে গিয়ে বাজার পেরলেই খানিকটা দূরে রয়েছে পূর্ব পুঁটিয়ারি ইটখোলা অঞ্চলের দু’টি পুকুর। ইটখোলার এক নম্বর পুকুরে স্থানীয় মানুষ প্রতিমা নিরঞ্জন করেন। যার জেরে ওই পুকুরের নীচে পলি জমে গিয়েছে। লাগোয়া আরও দু’টি পুকুর রয়েছে। সেগুলির অবস্থাও ভালো নয়। জল থাকলেও তা ব্যবহারের অযোগ্য ছিল। পুকুরের পাশে রয়েছে ময়লার ঢিবি। তা কার্যত ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এবার ইটখোলা ১ নম্বর এলাকায় থাকা পাশাপাশি তিনটি পুকুরকে যুক্ত করা হয়েছে। পুকুরগুলির মাঝে যে আলপথ ছিল, তা কেটে ফেলায় এখন বড় জলাশয়ের চেহারা নিয়েছে। পুরসভার নিকাশি বিভাগ এই পুকুরগুলিকে পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেছে। এক পুরকর্তা বলেন, ইতিমধ্যেই প্রায় আড়াই হাজার লরি মাটি তোলা হয়েছে। সেই মাটি কাটতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ শ্রমিকদের। পুকুরের পাশে যে ঢিবি ছিল, তাতে একের পর এক কেউটের বাসা। পরে জেসিবি এনে সেই মাটি কাটা হয়। পাশাপাশি, পুকুরের পাড় বাঁধাই করা হচ্ছে। পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে চারপাশ। পুকুরের পাড়ে ছোট ছোট গাছ লাগিয়ে ‘গ্রিন জোন’ বানানো হবে। 

    ইটখোলা ২ নম্বর পুকুরটি আকারে অতটা বড় না হলেও প্রায় তিন একর এলাকাজুড়ে রয়েছে। সেখানে একইভাবে মাটি কেটে পুকুরের গভীরতা বাড়ানো হচ্ছে। খননের কাজ দেখে খুশি এলাকার লোকজন। স্থানীয় বাসিন্দা বাপ্পা মজুমদার বলেন, পুকুর সংস্কার হলে এলাকার চেহারাই বদলে যাবে। একটা ভালো বিশ্রামের জায়গা তৈরি হবে। এলাকার পরিবেশ পাল্টে যাবে। নিকাশি বিভাগের এক কর্তা বলেন, এই দু’টি পুকুর এলাকার ফুসফুসে পরিণত হবে। পুকুর খননের পাশাপাশি গোটা এলাকাকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। ভবিষ্যতে একটি সুইমিং পুল বানানোরও পরিকল্পনা রয়েছে। জানা গিয়েছে, এই দু’টি পুকুর সংলগ্ন রাস্তা আরও চওড়া হবে। ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, পুকুর সংস্কার ও এলাকার সৌন্দর্যায়ন করা জরুরি ছিল। বিসর্জনের ঘাটটি নতুন করে বানানো হবে। প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য স্থায়ী কংক্রিটের র‌্যাম্প ও আলোর ব্যবস্থা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)