এই সময়, কালনা: গুজরাটের রাজকোটে কাজে গিয়ে সারা শরীরে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে বাড়ি ফিরেছে কালনার উপলতি গ্রামের ১২ বছরের এক কিশোর। অভিযোগ, সেখানে যে সিটি গোল্ডের দোকানে ওই কিশোর কাজ করত, তার মালিকের অত্যাচারের শিকার হয়েছে সে।
কালনার শিকারপুরের যে ব্যক্তি তাঁকে কাজের জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে বুধবার কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কালনার এসডিপিও রাকেশ চৌধুরী বলেন, ‘ওই কিশোরের মা অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’
এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি শাসিত রাজ্যে কালনার কিশোরের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্টে লেখা হয়েছে— ‘প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে শুধু শিশুশ্রমই বাঁচিয়ে রাখা হয়নি, অমানবিক অত্যাচারও করা হয়েছে কালনার এক কিশোরের উপরে।
তাকে জোর করে গুজরাটে জুয়েলারি ফ্যাক্টরিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নৃশংস ভাবে নিগৃহীত হয়েছে সে। তার শরীরে রয়েছে অসংখ্য আঘাত। ট্রমার মধ্যে রয়েছে সে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার তার সুরক্ষা ও চিকিৎসার সবরকম ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
বছর দুয়েক আগে কালনারই শিকারপুরের বাসিন্দা এক ব্যক্তির সঙ্গে রাজকোটে কাজে গিয়েছিল ওই কিশোর। সেখানে কাজ করা এক যুবকের সঙ্গে রবিবার হাওড়ায় পৌঁছে বাড়ি ফেরে সে। ছেলের হাল দেখে শিউরে ওঠেন তার মা-বাবা।
তাকে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে ওই কিশোরকে হাসপাতালে দেখতে যান মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। এ দিন হাসপাতালে গিয়ে ওই কিশোর ও তার মা-বাবার সঙ্গে কথা বলেন এসডিপিও রাকেশ চৌধুরীও।
মন্ত্রী ওই কিশোরের কাছে জানতে চান কেন সে ভিন রাজ্যে কাজে যায়। কী ভাবে তাকে মারধর করা হয় তা শোনেন মন্ত্রী। তার মাকে জিজ্ঞাসা করেন, সমস্ত সরকারি পরিষেবা তাঁরা পান কি না। কিশোরের মা জানান, তাঁদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড এখনও হয়নি।
মন্ত্রী ওই কিশোরের মা-বাবার উদ্দেশে বলেন, ‘ছেলেকে বাইরে কাজে পাঠিয়ে তোমরাও অন্যায় করেছ।’ ওই দম্পতির চার সন্তান শুনে জন্ম নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে কেন বোঝানো হয়নি তাও মন্ত্রী জানতে চান এক আধিকারিকের কাছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘কিশোরের মা জানিয়েছেন, তিন হাজার টাকার জন্য ছেলেকে কাজে ভিন রাজ্যে পাঠিয়েছিলেন তাঁরা। শিকারপুরের এক ব্যক্তি নিয়ে গিয়েছিলেন। পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।’