দিব্যেন্দু সরকার, আরামবাগ
কেয়া মাইতি, রামপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়, দেবব্রত মালিক, মহাদেব দাসের মতো নিত্যযাত্রীদের কেউ বললেন, ‘হ্যাপি বার্থডে আরামবাগ রেল’, কেউ বললেন, ‘আরামবাগ রেলকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা’, কেউ বা বললেন, ‘স্বপ্নের আরামবাগ রেল দীর্ঘজীবী হোক।’
একজন বললেন, ‘ভাবাদিঘি জট কাটুক আর কামারপুকুরে রেল চলুক।’ আবার কেউ বললেন, ‘মাত্র ২৫ টাকায় আরামসে হাওড়া। শর্ট টাইমে, অল্প পয়সায় হাওড়া, ভাবা যায়? আমরা গর্বিত।’
বুধবার, ৪ জুন আরামবাগ রেলের জন্মদিন। গুটি গুটি পায়ে চলতে চলতে আজ ১৩ বছর পূর্ণ হলো আরামবাগ রেলের। প্রথম চালু হয়েছিল ২০১২ সালের এই দিনটায়। তখন রেলমন্ত্রী মুকুল রায়। তাঁর হাত ধরেই আরামবাগ রেল চালু হয়।
ওই দিন তিনি আরামবাগে এসে রেলের উদ্বোধন করেন। তার পর থেকে আজ পর্যন্ত যাত্রীদের অনেক প্রত্যাশাই মিটেছে। প্রত্যাশা আরও আছে। যেমন, ভাবাদিঘি জট কাটিয়ে কামারপুকুর ও জয়রামবাটি পর্যন্ত রেল চলুক।
যাত্রীদের আশা, এই জট খুব শীঘ্রই কেটে যাবে। বিগত ১৩ বছরে একটু একটু করে আজ লক্ষ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এটাও দাবি। আরামবাগের বিধায়ক রেল দপ্তরে আপাতত তিনটি ট্রেন বাড়ানোর দাবি জানান লিখিত ভাবে।
ভারতীয় রেলের স্বপ্নের তারকেশ্বর–বিষ্ণুপুর লাইনের আরামবাগের রেলের এই জন্মদিনকে স্মরণ করে যাত্রীরা তাঁদের সুবিধা–অসুবিধার কথা জানালেন ‘এই সময়’ পত্রিকাকে। আরও উন্নয়নের আশা প্রকাশ করেন তাঁরা।
আরামবাগের বিধায়ক মধুসূদন বাগ বলেন, ‘৪ জুন ২০১২ সালে চালু হয়েছিল আরামবাগ তারকেশ্বর পর্যন্ত রেল চালু হয়। ডিজেল ইঞ্জিনের ট্রেন ছিল। তারপর ধাপে ধাপে অনেক অগ্রগতি হয়েছে।
এই মুহূর্তে দক্ষিণবঙ্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা আরামবাগ। লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ রেলপথ ব্যবহার করেছেন। অল্প পয়সায়, অল্প সময়ে, আরামের যাত্রা হলো এই রেল। যাত্রী সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে। তাই আমি জন্মদিনের আগেই ট্রেন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছি রেলের কাছে। আরামবাগবাসী হিসেবে এটা আমাদের গর্ব।’
মহারাষ্ট্রের পুণের বাসিন্দা কেয়া মাইতির বাপের বাড়ি আরামবাগে। তিনি বলেন, ‘আমি যখন পুণেতে থাকতাম, তখন এখান থেকে ছবি পাঠাত ভাইরা। ভিডিও কল করে দেখাত। আর আমি এখন সেই আরামবাগ স্টেশনেই দাঁড়িয়ে আছি। খুব গর্ব হচ্ছে।’
রামপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়, দেবব্রত মালিক, মহাদেব দাসদের মতো অনেকেই বলেছেন, ‘দলাদলি না করে, এই জন্মদিনে আমাদের একান্ত আবেদন, ভাবাদিঘি জট কাটিয়ে দিন। রামকৃষ্ণ দেবের কামারপুকুর আর মা সারদাদেবীর পুণ্যভূমি জয়রামবাটির সঙ্গে আরামবাগ রেল যুক্ত করুন। তা হলে আমাদের স্বপ্ন পূরণ হবে।’