• করোনা মোকাবিলায় রাজ্যে মক ড্রিল
    প্রতিদিন | ০৫ জুন ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার: দেশে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ৪ হাজারের গণ্ডি। বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে দেশে কোভিড আক্রান্ত ৪ হাজার ৩০২। এমতাবস্থায় বঙ্গের সরকারি হাসপাতালে ‘অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা’ ঝালিয়ে নিতে বুধবার থেকে শুরু হল মক ড্রিল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে বার্তা এসেছিল মঙ্গলবারই। প্রস্তুত থাকতে হবে।

    উল্লেখ্য, গত ২ এবং ৩ জুন ডিরেক্টর জেনারেল অফ হেলথ সার্ভিস ডা. সুনীতা শর্মা উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক ডাকেন। সে বৈঠকে হাজির ছিল বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর, এমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট রেসপন্স সেল, ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের সদস্যরা। উপস্থিত ছিল বাংলা-সহ প্রতিটি রাজ্যের প্রতিনিধিরাও।

    কী আলোচনা হল বৈঠকে?
    সকলের স্বীকার করে নিয়েছেন, নয়া প্রজাতি অত্যন্ত ছোঁয়াচে হওয়ায় উত্তরোত্তর বাড়ছে রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশজুড়ে নতুন করে ৮২৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন কোভিডে। তবে চিকিৎসকরা আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, সিংহভাগ রোগীর শরীরে কোভিডের নয়া প্রজাতি তেমন কোনও ক্ষতি করতে পারছে না। অধিকাংশ আক্রান্ত বাড়িতেই চিকিৎসা করে সুস্থ হয়ে উঠছেন। বিপদ তাঁদেরই যাঁদের শরীরে কিডনির অসুখ-ক্যানসারের একাধিক কোর্মবিডিটি রয়েছে। মতো
    গত ১ জানুয়ারি থেকে ৪ জুন পর্যন্ত কোভিড আক্রান্ত হয়ে দেশে মৃত্যু হয়েছে ৪৪ জনের। এদের সকলেরই কোর্মবিডিটি ছিল। প্রতিটি রাজ্যে প্রবীণ জনসংখ্যা নেহাত কম নয়। বার্ধক্যের এই সমস্ত মানুষদের নিয়ে চিন্তিত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। কেন্দ্রের স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে প্রতিটি রাজ্যকে বলা হয়েছে কোনওরকম ঝুঁকি না নিয়ে হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন, আইসোলেশন বেড, ভেন্টিলেটর তৈরি রাখতে। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, অক্সিজেন সাপ্লাই সিস্টেমকে ফের ঝালিয়ে নিতে সরকারি হাসপাতালগুলোয় বুধবার থেকে শুরু হয়েছে মকড্রিল।

    আমজনতার জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের সাবধানবাণী, “জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরবেন না। এমন অবস্থায় এড়িয়ে চলুন জনবহুল জায়গা। ফুসফুসে যে কোনও ধরনের সংক্রমণে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন, হাঁচি-কাশি হলে নাকে-মুখে রুমাল চাপা দিন।”

    বাংলাতেও বাড়ছে কোভিড আক্রান্ত। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিৎসক। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার থেকে জ্বর-সর্দির উপসর্গ দেখা যায় ওই চিকিৎসকের মধ্যে। এরপর তিনি লালারসের নমুনা পরীক্ষা করেন। সেখানেই ধরা পড়ে কোভিড পজিটিভ।

    জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসক বর্তমানে নিজের বাড়িতেই আইসোলেশনে রয়েছেন। এদিকে দক্ষিণ শহরতলির পিয়ারলেস হাসপাতালে কোভিড পজিটিভ হয়ে ভর্তি হয়েছে এক সাত মাসের শিশু। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা দের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছে ওই শিশুটি। চিকিৎসক জানিয়েছেন, সোমবার ভোররাতে শিশুটি হাসপাতালে আসে। মায়ের বুকের দুধ টানছিল না। ধুম জ্বর ছিল। ছিল অল্প শ্বাসকষ্টের সমস্যাও। আইভিফ্লুইড চালু করি সঙ্গে সঙ্গে। আন্দাজ করেছিলাম, কোনও কঠিন ভাইরাস আক্রমণ করেছে শিশুটিকে। নিশ্চিত হতে ভাইরাল প্যানেল টেস্ট করি। সেখানেই দেখতে পাই কোভিড ভাইরাসে আক্রান্ত ওই শিশু। ডা. সংযুক্তা দে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে কোভিড পজিটিভ আসছে তাদের মধ্যে গা-হাত-পায়ে ব্যথা, পেট ব্যথা, জ্বরের সঙ্গে পাতলা পায়খানার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসকের আশঙ্কা, কোভিডের নতুন এই প্রজাতি অত্যন্ত ছোঁয়াচে। সকলে টেস্ট করছেন না। যেহেতু সাধারণ ফ্লুয়ের সঙ্গে এর উপসর্গ এক, তাই বুঝতেও পারছেন না। তা নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন। ফলে অসুখ ছড়াচ্ছে দ্রুত। চিকিৎসকদের পরামর্শ, বাড়ির কারও জ্বর এলে নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাবেন না।
  • Link to this news (প্রতিদিন)