‘অপারেশন সিঁদুর’ পরবর্তী পরিস্থিতিতে ‘চিকেন্’স নেক’ করিডর (যা ‘শিলিগুড়ি করিডর’ নামেও পরিচিত) সংস্কারের রূপরেখা অনেকটাই চূড়ান্ত হয়েছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। সরকারি ভাবে দেশের নিরাপত্তায় ‘চিকেন্’স নেক’ পরিকাঠামো ভৌগোলিক এবং কৌশলগত কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার সঙ্গে তা ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, তিন ধাপে ওই করিডর সংস্কারের কাজ হওয়ার কথা। প্রথম ধাপে সেবক এলাকায় তিস্তা নদীতে নতুন একটি সেতু হবে। যা তৈরির ভার পেয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বা ‘এনএইচএআই’। দ্বিতীয় ধাপে নতুন সেতু এবং অসম সীমানা ছোঁয়া জাতীয় সড়ক ১৭ পর্যন্ত রাস্তাও সম্প্রসারিত হয়ে চার লেনের হবে। সে কাজের বিশদ প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) এবং খরচ ঠিক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।তৃতীয় ধাপে শিলিগুড়ির ভিতর দিয়ে প্রায় ১২ কিলোমিটার রাস্তার সম্প্রসারণ চলছে। এর পরে, সেবক সেনা ক্যান্টনমেন্ট থেকে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে আরও ১৪ কিলোমিটার ‘এলিভেটেড রোড’ বা উড়াল-পথের নির্মাণ করা হবে। সে সংক্রান্ত প্রাথমিক ‘ডিপিআর’ কেন্দ্রকে দিয়েছে রাজ্য। প্রকল্পটি শিলিগুড়ির ‘বেঙ্গল সাফারি’ জঙ্গল এমনকি, ‘মহানন্দা ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি’র মধ্য দিয়ে যাবে। সে জন্য পরিবেশ এবং বনাঞ্চলের ছাড়পত্র চলে এসেছে বলে জানাচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ। এক কর্তার কথায়, “এই সব ক’টি কাজই চিকেন্’স নেক পরিকাঠামো সম্প্রসারণের অন্তর্গত।”
প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, বাংলাদেশে এখন নিষ্ক্রিয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার কিছু বিমানঘাঁটির পরিকাঠামোও চাঙ্গা করার চেষ্টা চলছে। যার মধ্যে অন্যতম লালমণিরহাট বিমানঘাঁটি। তার এ পারে কোচবিহার রয়েছে। অন্য প্রান্তে ‘শিলিগুড়ি করিডর’। এ দিকে, বাগডোগরা ছাড়াও হাসিমারায় বায়ুসেনা ছাউনি রয়েছে। তার প্রধান পরিকাঠামো যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও মজবুত করা।বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতের সুরক্ষার প্রশ্নে ‘শিলিগুড়ি করিডর’ অতি গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহখানেক আগে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মাও কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, এ দেশের ‘চিকেন্’স নেক’-এর দিকে কুনজর পড়লে, তার জবাব দিতে প্রস্তুত ভারতও।২০২২ সাল নাগাদ গোটা ‘শিলিগুড়ি করিডর’-এর পরিকাঠামো সংস্কার খাতে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে কেন্দ্র। পরিকাঠামো সংস্কার হলে, প্রতিরক্ষার দিক থেকে তা ‘শিলিগুড়ি করিডর’-কে মজবুত, সুগম এবং দুর্ভেদ্য করে তুলবে।