• ঠোঁটকাটা মহুয়ার মন জিতেছেন, কে এই পিনাকী মিশ্র?
    এই সময় | ০৫ জুন ২০২৫
  • গুঞ্জন ছিলই। অবশেষে চার হাত এক হলো তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং প্রাক্তন বিজেডি সাংসদ পিনাকী মিশ্রের। জার্মানির বার্লিনে দু’জনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। কে পিনাকী মিশ্র, যাঁকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিলেন মহুয়া।

    ১৯৫৯ সালে ২৩ অক্টোবর কটকে জন্মগ্রহণ করেন পিনাকী। দিল্লির সেন্ট স্টিফেনস কলেজে ইতিহাসে অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করেন। এরপর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। আইন ও রাজনীতি সম্পর্কে তাঁর ঝোঁক ছিল ছাত্রজীবন থেকেই। রাজনীতিতে প্রবেশের আগে আইনের জগতে দীর্ঘ ও সফল কেরিয়ার ছিল তাঁর। বৈদেশিক মুদ্রা, খনি, কোম্পানি আইন, শুল্ক ও আবগারি এবং সাংবিধানিক আইনের মতো একাধিক বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা রয়েছে তাঁর।

    রাজনীতির হাতেখড়ি হয় কংগ্রেসের হাত ধরেই। ১৯৯৬ সালে ওডিশার পুরী আসন থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তৎকালীন পুরী সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ব্রজ কিশোর ত্রিপাঠীকে পরাজিত করে রাজনীতির জগতে পরিচিত পেতে শুরু করেন পিনাকী। পরের নির্বাচনগুলিতে পরাজিত হলেও ২০০৯ সালে পুনরায় সংসদের অলিন্দে পা রাখেন পিনাকী। যদিও কংগ্রেসের হাত ছেড়ে ততদিনে বিজু জনতা দলে নাম লিখিয়েছেন তিনি। বিজু জনতা দলের টিকিটেই ২০০৯ থেকে ২০১৯ পর পর তিনবার সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালে যদিও তাঁকে আর টিকিট দেননি নবীন পট্টনায়েক।

    তৃণমূল সাংসদ ও পিনাকীর বর্তমান স্ত্রী মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সংসদে অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ তোলে ওঠে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে যে বিতর্ক নিয়ে উত্তাল হয় গোটা দেশ। সেই বিতর্কে নাম জড়ায় পিনাকীরও। পার্লামেন্টের এথিক্স কমিটির কাছে ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানি যে অভিযোগ করেছিলেন, সেখানে পিনাকী মিশ্রের নাম ছিল বলেও দাবি করেছিল বিজেপি। এমনকী, পিনাকীর সঙ্গে মহুয়া মৈত্রের ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্ক ছিল বলেও আলোচনা চলে রাজনৈতিক মহলে।

    অর্থের বিনিময়ে প্রশ্নের বিতর্কে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয় মহুয়াকে। এমনকী তাঁকে বাংলো খালি করার জন্যেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় থেকেই মহুয়াকে আইনি সহায়তা দিয়ে আসতেন পিনাকী মিশ্র। মহুয়া মৈত্রের পক্ষে আদালতে মিশ্র আবেদন করেছিলেন যে, তাঁকে সরকারি বাংলোয় থাকতে দেওয়া হোক। আইনজীবী জয় অনন্ত এর পরেই দাবি করেন, বাংলো খালি করে দেওয়ার নির্দেশ আসার পরেই মিশ্রের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন মহুয়া। যদিও, এই বিষয়টি নিয়ে দু’জনের তরফে প্রকাশ্যে কিছু বলতে শোনা যায়নি।

    আমেরিকায় ইনভেসমেন্ট ব্যাঙ্কার হিসেবে কয়েক বছর কাজ করার পর ভারতীয় রাজনীতিতে আসার বাসনা জাগে মহুয়ার। উচ্চ পদের চাকরি ছেড়ে কংগ্রেসের হয়ে রাজনীতিতে নামেন মহুয়া। কিছু দিনের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান। ২০১৬ সালে করিমপুর কেন্দ্রে তাঁকে বিধানসভার টিকিট দেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন বছর পরেই একলাফে সংসদে প্রবেশ। ২০১৯ থেকে টানা দু’বার কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মহুয়া।

  • Link to this news (এই সময়)