এই সময়, দিঘা: উদ্বোধনের পর থেকেই মন্দির দেখতে ও পুজো দিতে প্রত্যেক দিন হাজার হাজার মানুষ ভিড় করছেন। এ বার রথের পালা। দিঘায় এ বার নতুন মন্দিরের প্রথম রথ।
স্থানীয় হোটেলগুলির মালিক ও ছোট ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এমনিতেই দিঘায় উইকেন্ডে ভিড় থাকে। রথযাত্রা উৎসবে যাঁরা পুরী যেতে পারতেন না, তাঁরা দিঘায় চলে আসতেন। এ বার রথে রেকর্ড ভিড় হবে বলে তাঁদের আশা।
৩০ এপ্রিল দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন হয়। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গত এক মাসে ৩০ লক্ষ দর্শনার্থী মন্দিরে এসেছেন। এসেছেন বিদেশি দর্শনার্থীরাও। প্রণামী বাক্সে জমা পড়েছে ২৭ লক্ষেরও বেশি টাকা।
এতদিন ওল্ড দিঘার পুরোনো জগন্নাথ মন্দিরে রথযাত্রা উৎসব পালন করা হতো। নতুন মন্দির তৈরির পরে এই পুরোনো জগন্নাথ মন্দির জগন্নাথের মাসির বাড়ি। এ বার রথে নতুন মন্দির থেকে পুরীর মতো তিনটি রথে চেপে মাসির বাড়ি যাবেন তিন ভাইবোন। ২৭ জুন রথযাত্রা।
ওই দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সোনার ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা ঝাঁট দেওয়ার কথা। যে রাস্তা দিয়ে রথ যাবে ওই রাস্তাই ঝাঁট দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সেই কাজও শেষ পর্যায়ে। ১২ জুন স্নানযাত্রা।
ওই দিন পাথরের স্থায়ী মূর্তি নয়, জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার নিমকাঠের তৈরি মূর্তি মন্দিরের বাইরে এনে স্নান করানো হবে। মন্দির চত্বরে যেখানে যজ্ঞ হয়েছিল সেখানে পঞ্চ অমৃত মেশানো ১০৮ কলসি জল দিয়ে স্নান করানো হবে। স্নানের পরে জগন্নাথ যাবেন নিভৃতবাসে।
এই সময়ে মন্দিররে জগন্নাথ দর্শন বন্ধ থাকবে। ২৬ জুনের পরে আবার মন্দিরে দর্শন দেবেন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের ট্রাস্টি কমিটির সদস্য ও ইসকনের কলকাতা শাখার সহ সভাপতি রাধারমন দাস বলেন, ‘রথযাত্রা ও স্নানযাত্রার প্রস্তুতি শেষ। এ বার রথযাত্রার অনুষ্ঠানে বিদেশি ভক্তরাও উপস্থিত থাকতে পারেন।’
রথের সময়ে ব্যাপক ভিড়ের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশাসনিক প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি, এসপি সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যর উপস্থিতিতে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে।
জেলাশাসক বলেন, ‘ভিড়ের কথা মাথায় রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে।’ মন্দির উদ্বোধনের পরে দিঘার পর্যটন ব্যবসায় যে সুদিন ফিরতে শুরু করেছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন হোটেল সংগঠনগুলি।
ওল্ড দিঘা হোটেল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনর সম্পাদক সহস্রাংশু মাইতি বলেন, ‘মন্দির উদ্বোধনের পর থেকে পর্যটন শিল্প একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।’