অর্ণবাংশু নিয়োগী: 'তিন মাস কোনও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবে না'। শর্তসাপেক্ষে শর্মিষ্ঠা পানোলির জামিনের আবেদন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট। ১০ হাজার টাকা বন্ডে জামিন পেলেন তিনি। বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর পর্যবেক্ষণ, 'যখন নোটিশ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল তখন শর্মিষ্ঠা কলকাতায় ছিলেন না। হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের কোনো প্রয়োজন নেই'।
এদিন শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, 'শর্মিষ্ঠা পালোনির উচিত ছিল জামিনের জন্য নির্দিষ্ট বেঞ্চে আবেদন জানানো। এই মামলা নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানো হোক'। তাঁর সওয়াল, 'অভিযোগ থেকে যদি দেখা যায় যে ধর্তব্যযোগ্য বা আদালতগ্রাহ্য অপরাধ হয়েছে, তাহলে পুলিস FIR দায়ের করতে পারে। পুলিশ শর্মিষ্ঠা পালোনিকে নোটিশ দেওয়ার জন্য তার বাড়িতে গিয়েছিল। সেখানে তিনি ছিলেন না। এরপর তাকে গ্রেফতার করার প্রয়োজন আছে কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার পুলিশের আছে। সমস্ত নিয়ম বিধি মেনে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে'।
বিচারপতির মন্তব্য, 'যে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল সেটা যান্ত্রিকভাবে করা হয়েছিল, সেখানে শুধুমাত্র গ্রেফতার করার অধিকার দেওয়া হয়েছিল, গ্রেফতার করতে হবে বলা হয়নি। ধর্তব্য যোগ অপরাধ আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার ছিল। নির্দিষ্টভাবে কি মন্তব্য করেছিলেন শর্মিষ্ঠা সেটা অভিযোগপত্রে বলা নেই'। সঙ্গে নির্দেশ, তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে শর্মিষ্ঠাকে। আদালতের অনুমতি ছাড়া দেশ ছাড়তে পারবেন না। শিক্ষাগত কারণে দেশের বাইরে যেতে হলে নিম্ন আদালতকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। শর্মিষ্ঠাকে পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা দিতে হবে।
এক্স হ্যান্ডেলে পোস্টে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দ অধিকারী লিখেছেন, শর্মিষ্ঠা পানোলি আজ ন্যায়বিচার পেল'। তাঁর অভিযোগ, বাক স্বাধীনতা ব্যবহারের জন্য এক নিরপরাধ তরুণীকে বেআইনিভাবে গ্রেফতার করেছিল পুলিস। পুলিসের অতিসক্রিয়তা ও রাজনৈতিক প্রভুদের খুশি করার আগ্রহের আরেকটি উদাহরণ'।
কলকাতার আনন্দপুরের বাসিন্দা শর্মিষ্ঠা। অপারেশন সিঁদুরের আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছিলেন তিনি। সেই পোস্টকে ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত। পরে অবশ্য় পোস্টটি সরিয়ে দেন বছর বাইশের ওই তরুণী। এমনকী, ক্ষমাও চেয়ে নেন। কিন্তু তাতেও বিতর্ক থামেনি। গার্ডেনরিচ থানায় শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ দায়ের করেন ওয়াজাহাত খান নামে এক ব্যক্তি। এরপর হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে ওই আইনের ছাত্রীকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ।