• কেন্দ্রীয় বরাদ্দ অমিল, উত্তর দিনাজপুরে পিছিয়ে যাচ্ছে জলজীবন মিশনের কাজ
    বর্তমান | ০৬ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: কয়েকমাস অমিল কেন্দ্রীয় বরাদ্দ। যার জেরে ক্রমে পিছিয়ে যাচ্ছে উত্তর দিনাজপুর জেলার জলজীবন মিশনের কাজ। যা নিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যেও দিন দিন বাড়ছে উদ্বেগ। 

    প্রশাসন সূত্রে খবর, জলজীবন মিশন খাতে উত্তর দিনাজপুর জেলার বকেয়া রয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। যার বেশিরভাগটা কেন্দ্র থেকে আসার কথা। ফলে দীর্ঘ সময় বকেয়া টাকা না পেয়ে কার্যত থমকে যাচ্ছে প্রকল্পটির গতি। কাজে উৎসাহ হারাচ্ছে প্রকল্পের জন্য নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থাগুলি। এমন অবস্থায় কাজের গতি বাড়াতে বৃহস্পতিবার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, বিধায়ক ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মীনা। সমস্যা সমাধানে কী করণীয়, সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বৈঠক শেষে জেলাশাসকের স্পষ্ট বার্তা, প্রকল্পের বকেয়া কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। জেলার মধ্যে তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে আছে গোয়ালপোখর-২ ও করণদিঘি ব্লক। সেখানেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এদিন। পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট ব্লকের আধিকারিকরা মিলে ব্লকস্তরে বৈঠক করার পরামর্শও দেন জেলাশাসক। 

    জলজীবন মিশনের কাজে জেলা পিছিয়ে, সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেকথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। এরপরই বিভাগীয়ভাবে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটাতে উঠেপড়ে লেগেছে প্রশাসন। সেইসঙ্গে ফান্ড পেতেও উদগ্রীব বলে জানা গিয়েছে।

    জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জেলায় ৫ লক্ষ ৮১ হাজার বাড়িতে জলের কল বসানোর কথা। সেক্ষেত্রে ২ লক্ষ ৩৭ হাজার বাড়িতে এখনও পর্যন্ত জলের সংযোগ গিয়েছে। অর্থাৎ, প্রকল্পের মাধ্যমে সার্বিকভাবে জেলায় ৪১ শতাংশ কাজ হয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ফান্ড এলে এবং সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক এগলে, আগস্টের মধ্যে ২৪ হাজার বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। তাহলে আমাদের জেলায় সার্বিকভাবে ৪৫ শতাংশ কাজ হতো। কিন্তু গত মার্চে রাজ্যের ফান্ড থেকে ১০ কোটি টাকা এসেছে। যা এজেন্সিগুলিকে দেওয়া হয়েছে। তারপরও জেলায় নিয়ুক্ত ঠিকাদারদের বকেয়া রয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। এর ফলে এজেন্সিগুলি  উৎসাহ হারাচ্ছে বলে কাজও অত্যন্ত ঢিমেতালে চলছে। তবে এজেন্সিগুলি জানিয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলে দ্রুত বকেয়া মেটানোর ব্যবস্থা হলেই কাজে ফের গতি আসবে। 

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার বলেন, আমাদের বকেয়া অনেক। গত মার্চে শেষবার অল্প টাকা এসেছে। তা দিয়ে খুব একটা উপকার হয়নি। টাকা এলেই যথাযথভাবে কাজ এগবে বলে আমরা আশা করছি। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)