পলিতে বিপর্যস্ত তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানেল, কয়েক দশকে জমেছে ৪১ লক্ষ কিউবিক মিটার পলি
বর্তমান | ০৬ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: দশকের পর দশক ‘ড্রেসিং’ হয়নি। তাই পলির ফাঁসে জেরবার তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানেল! প্রশাসন সূত্রে খবর, দীর্ঘ ২৫ কিমি লম্বা ক্যানেলে জমেছে ৪১ লক্ষ কিউবিক মিটার পলি। যারজেরে শিলিগুড়ি শহরের জল প্রকল্পের ফুলবাড়ি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট কার্যত বিপর্যস্ত। ইতিমধ্যে প্লান্টের একটি ইনটেক ওয়েল অচল। এবার সংশ্লিষ্ট খালের পলি তুলবে মাইনিং অ্যান্ড মিনারেল কর্পোরেশন। ইতিমধ্যে তারা এ ব্যাপারে টেন্ডার ডেকেছে বলে খবর।
গজলডোবায় তিস্তা ব্যারেজ থেকে সংশ্লিষ্ট ক্যানেলের উৎপত্তি। সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন দশক আগে গজলডোবায় তিস্তা ব্যারেজ তৈরি হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যারেজে গেট ৪৫টি। এরপর সংশ্লিষ্ট ব্যারেজের বাঁ পাশে তৈরি করা হয় তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানেল। এই ক্যানেলে গেট ১৩টি। তিস্তা ব্যারেজ থেকে তিস্তা নদীর জল ক্যানেল দিয়ে যায়। ক্যানেলটি প্রায় ২৫ কিমি লম্বা। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়া ক্যানেলে জমেছে পলিরস্তর। যারজেরে খালের নাব্যতা কমেছে।
সেচদপ্তরের এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, তিন বছর আগে ওই ক্যানেলের গেট থেকে ৯ কিমি পর্যন্ত অংশ ড্রেসিং করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ৬০ কোটি টাকার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। সেই প্রস্তাব এখনও অনুমোদন হয়নি। তাই পলি ও বালিতে জেরবার ওই ক্যানেল। যার গর্ভ অনেকটাই উঁচু হয়ে গিয়েছে। এরজেরে তিস্তা ব্যারেজ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল খালে প্রবেশ করানো যাচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট খালের উপর নির্ভর করেই ১৯৯৯ সালে ফুলবাড়িতে তৈরি হয় শিলিগুড়ির জল প্রকল্পের ট্রিনমেন্ট প্লান্ট। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট প্লান্টের একটি ইনটেক ওয়েল কার্যত অচল হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে প্লান্ট নিয়ন্ত্রণ করছে পুরসভা। বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে সেচদপ্তর সহ প্রশানের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। তিনি বিষয়টি সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়াকে জানিয়েছেন। মেয়র বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ক্যানেলে পলি, বালি জমলেও তা সরানোর কথা আগে কেউ ভাবেনি। কয়েক মাস আগে সেচদপ্তরের সহযোগিতায় কিছুটা পলি তোলা হয়েছিল। তারপরও প্লান্টের প্রথম ইনটেক ওয়েল সচল রাখতে পারিনি। পলিতে সেটি জেরবার। এবার মাইনিং ও মিনারেল কর্পোরেশন খাল থেকে এক লক্ষ কিউবিক মিটার পলি তুলবে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্পোরেশনের ডিরেক্টার স্বারকী মহাপাত্রের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ ব্যাপারে টেন্ডার হয়েছে বলে খবর মিলেছে। এই কাজ বাস্তবায়িত হলে কিছুটা সমস্যা মিটবে। শুধু জল প্রকল্প নয়, সংশ্লিষ্ট ক্যানেলে পলি পড়ায় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও চাষাবাদেও প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা।