নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: আলিপুরদুয়ার থেকে বর্ধমানের রমনাবাগানে হাজির প্রিয়া, শ্রেয়া এবং প্রতাপ। বৃহস্পতিবার রাজকীয়ভাবে তাদের অভ্যর্থনা জানানো হয়। এদিন রাজ্যের প্রাণিসম্পদ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার, জেলাশাসক আয়েশা রানি এ, পুলিস সুপার সায়ক দাস সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনরা হাজির ছিলেন। তাঁদের উপস্থিতিতেই এই তিনটি চিতাবাঘকে দর্শকদের সামনে আনা হয়। এছাড়া, কাকাতুয়া প্রজাতির ১৪টি পাখি রমনাবাগানে আনা হয়েছে। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, আগামী দিনে এই চিড়িয়াখানার আকর্ষণ আরও বাড়বে। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে পর্যটকরা আসেন। এখানে আগে থেকেই চিতাবাঘ ছিল। সেই সংখ্যাটা আরও বাড়লো।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, রমনাবাগানের পরিকাঠামো উন্নয়নে আরও কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বয়স্ক পর্যটকদের এই চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখতে যাতে অসুবিধা না হয়, তারজন্য বিশেষ গাড়ি আনারও চিন্তাভাবনা রয়েছে। আধিকারিকদের দাবি, আগের তুলনায় পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পড়ুয়ারা শিক্ষামূলক ভ্রমণের জন্য এখানে আসে। চিড়িয়াখানার পরিকাঠামো উন্নত হলে পর্যটক আরও বাড়বে।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে রমানবাগানে দু’দিন ধরে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়। বৃক্ষ রোপণেও জোর দেওয়া হয়। এদিন ডিএফও সঞ্চিতা শর্মা, এডিএফও সৌগত মুখোপাধ্যায় বৃক্ষ রোপণ করেন। জেলা প্রশাসনের অন্যান্য শীর্ষ কর্তারাও গাছ রোপণ করেন। জেলাশাসক বলেন, রমনাবাগানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। আমাদের আরও বেশি করে বৃক্ষ রোপণে জোর দিতে হবে। প্রকৃতির রোষ বেড়েই চলছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে গাছ লাগানো ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। রমনাবাগানে এসে যেমন বিভিন্ন ধরনের গাছ চাক্ষুষ করা যাবে, তেমনই দেখা মিলবে নানা প্রাণীর।
বনদপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, রমনাবাগানে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আনার পরিকল্পনাও এক সময় করা হয়েছিল। কিন্তু, এই পরিবেশে তারা সুস্থ থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। তারপরই সিদ্ধান্ত বদল হয়। তবে, চিতাবাঘগুলি পর্যটকদের মন জয় করতে পারবে বলে আধিকারিকরা মনে করছেন। পর্যটকদের দাবি, রমনাবাগানের প্রতি আধিকারিকদের আরও বেশি করে নজর দেওয়া উচিত। কয়েক মাস আগে এখানকার জলাশয়ে দু’টি কুমিরের রাতভর সংঘর্ষ হয়। একটি কুমির মারা যায়। তার কিছুদিন পর সংঘর্ষে একটি হরিণকেও মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। কর্মীরা ভালোভাবে নজর দিলে এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না বলে অনেকে মনে করছেন।
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের মন্ত্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্রের উন্নয়ন হচ্ছে। রমনাবাগানও এগিয়ে যাচ্ছে। পাখি, হরিণ, কুমির পর্যটকদের মন জয় করে। এবার প্রিয়া, শ্রেয়া এবং প্রতাপ সবার কাছে প্রিয় হয়ে উঠবে।