নিয়ম অমান্য করে বাইরে প্র্যাকটিস? বিএমওএইচ সহ অন্যান্য ডাক্তারদের উপর নজর
বর্তমান | ০৬ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের প্যাডে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের প্রেসক্রিপশন লেখায় রামপুরহাট-১ বিএমওএইচের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠেছে। এরপরই নড়েচড়ে বসল বীরভূম জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর। জেলার চিকিৎসকদের গতিবিধির উপর নজরদারি চালানোর কাজ শুরু হয়েছে। নন প্র্যাকটিসিং পোস্টে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা কোনও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন কি না, তা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। সেইসঙ্গে নন প্র্যাকটিসিং অ্যালাওয়েন্স নিয়েও কোনও চিকিৎসক প্রাইভেট সংস্থায় চুটিয়ে প্র্যাকটিস করছেন কি না, সেসবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, কোনও ক্ষেত্রে নিয়মভঙ্গের ঘটনা প্রকাশ্যে এলে নির্দিষ্ট ওই চিকিৎসককে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভব্রত ঘোষ বলেন, জেলাজুড়ে নজরদারি শুরু হয়েছে। কোনও ক্ষেত্রে অনিয়ম প্রকাশ্যে এলে সরাসরি রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরে বিষয়টি জানানো হবে।
ভাইরাল অডিও ক্লিপ কাণ্ডে পুলিসের তরফে অনুব্রত মণ্ডলকে নোটিস পাঠিয়ে হাজিরা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। তবে অসুস্থতার কথা জানিয়ে অনুব্রত মণ্ডল একাধিক হাজিরা এড়িয়েছেন। অসুস্থতার কারণে চিকিৎসক তাঁকে পাঁচদিন বিশ্রামের পরামর্শও দিয়েছিলেন। তথ্য প্রমাণ হিসেবে চিকিৎসকের সই করা প্রেসস্ক্রিপশন পুলিসের কাছে জমা পড়েছে। ওই প্রেসক্রিপশনকে কেন্দ্র করে রামপুরহাট-১ ব্লকের বিএমওএইচের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে জানা গিয়েছে, বিএমওএইচ পদটি নন প্র্যাকটিসিং। এছাড়াও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, গ্রামীণ হাসপাতাল, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারেন না। কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, এই তিন ক্ষেত্রে যুক্ত চিকিৎসকদের ২৪ ঘণ্টা কর্তব্যরত থাকার কথা। একইভাবে বিএমওএইচ হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকও কোনও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন না। প্রতিক্ষেত্রেই চিকিৎসকদের নন প্র্যাকটিসিং অ্যালাওয়েন্স বাধ্যতামূলক। যদিও বহু ক্ষেত্রেই জেলায় নিয়ম ভাঙার অভিযোগও রয়েছে বলে একাংশ চিকিৎসক মত প্রকাশ করছেন। নাম না প্রকাশের শর্তে বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের দাবি, নিয়মের তোয়াক্কা না করেই নন প্র্যাকটিসিং পদে থাকা চিকিৎসকরা দেদারে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন। সেই সঙ্গে নন প্র্যাকটিসিং অ্যালাওয়েন্স নিয়েও একাংশ চিকিৎসক প্রাইভেট প্র্যাকটিস চালিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
নিয়ম অনুসারে, মহকুমা হাসপাতাল সহ জেলা হাসপাতাল চিকিৎসকেরা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারেন। যদিও সবটাই শর্ত সাপেক্ষে। একাধিক শর্তের মধ্যে অন্যতম, ওই চিকিৎসকরা নন প্র্যাকটিসিং অ্যালাওয়েন্স নিতে পারবেন না। এছাড়াও সরকারি পরিষেবা বিঘ্নিত না করেই প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে হবে। অন্যদিকে, পদাধিকারী কোনও চিকিৎসকের ক্ষেত্রেই প্রাইভেট প্র্যাকটিসের অনুমতি থাকে না। তবে নিয়ম ভাঙার অভিযোগ অবশ্য কম নেই। ঘটনায় এবার স্বাস্থ্য দপ্তরও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে। জেলাজুড়ে চিকিৎসকদের উপর কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। তবে আদৌ কী নিয়ম ভাঙার খেলা বন্ধ হবে? এই প্রশ্ন অবশ্য এখন লাখ টাকার।