• নিকাশি খালের উপর ব্রিজ বানানো নিয়ে তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষ
    বর্তমান | ০৬ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: নিকাশি খালের উপর কংক্রিটের ব্রিজ বানানো নিয়ে তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল তমলুক থানার হোগলবেড়িয়া গ্রামে। তৃণমূলের ব্লক সাধারণ সম্পাদক শেখ জামশেদ আলি সহ সাত-আটজন তৃণমূল নেতাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। জামশেদ আলির দোকানঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত আইএসএফ কর্মীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে রামতারকহাটে কোলাঘাট-হলদিয়া জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন তৃণমূল কর্মীরা। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে তমলুক থানার আইসি সুভাষচন্দ্র ঘোষ বিশাল পুলিস বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। র‌্যাফ নামানো হয়। কোনওরকমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে জাতীয় সড়ক অবরোধ মুক্ত করা হয়।

    শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বল্লুক-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন হরশঙ্কর-রানিচক বুথে ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে জয়ী হন আইএসএফের রিজিয়া বিবি। ওই গ্রামে আইএসএফের সংগঠন মজবুত। ওই গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ রানা নিজের বাড়িতে যাতায়াতের জন্য একটি নিকাশি খালের উপর কংক্রিটের ব্রিজ তৈরির কাজ শুরু করছিলেন। এই ব্রিজ নিয়েই ঝামেলার সূত্রপাত। জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় ১৫ ডেসিমল সরকারি জায়গা রয়েছে। সেই জায়গার প্রতি নজর তৃণমূল ও আইএসএফ দুই দলের নেতা-কর্মীদেরই। সেই সরকারি জায়গার উপর দিলীপবাবু নিজের বাড়িতে যাওয়ার জন্য নিকাশি খালের উপর সেতু তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছিলেন। আগে কাঠের সেতু রয়েছে। তার গা ঘেঁষে কংক্রিটের সেতু বানানোর কাজ শুরু হয়েছিল।

    ওই কংক্রিটের সেতু তৈরির বিরুদ্ধে এককাট্টা তৃণমূল। অপরদিকে, আইএসএফ ওই সেতু তৈরির জন্য দিলীপবাবুকে সবরকম সহযোগিতা করছে। মঙ্গলবার রাতে প্রায় ২০০ আইএসএফ কর্মীর উপস্থিতিতে নিকাশি খালের উপর বড় বড় গর্ত করে সেতু তৈরি শুরু হয়। বুধবার শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বিডিও, তমলুক থানায় অভিযোগ জানান তৃণমূল নেতা শেখ জামশেদ আলি। বৃহস্পতিবার ফের কাজ শুরু হলে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পুনরায় বিডিওকে ফোন করে নালিশ জানানো হয়। থানার নজরেও বিষয়টিও আনা হয়। বিডিও-র নির্দেশে বল্লুক-২ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ এলাকায় গিয়ে ওই কাজ না করার নির্দেশ দেয়।

    কাজে বাধা আসার পরই আইএসএফ কর্মীরা অতর্কিতে হোগলবেড়িয়ার মহাশ্বেতা বাজারে তৃণমূল নেতা জামশেদ আলির দোকানে হামলা চালায়। ওই তৃণমূল নেতাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। তাঁর সঙ্গী সাথীদেরও বেদম পেটানো হয়। ওই ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। এরপর তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা জড়ো হয়ে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন।

    বল্লুক-২ পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের কাজু রফিক আহমেদ বলেন, ব্যক্তিগত বাড়িতে আসা যাওয়ার জন্য নিকাশি খালের উপর কংক্রিটের সেতু বানানো নিয়ে ঝামেলা। আমাদের দলের লোকজন ওই কাজে বাধা দেয়। অপরদিকে, আইএসএফ কর্মীরা ওই সেতু তৈরির জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। এই দ্বন্দ্বে এদিন মারপিট হয়েছে। জামশেদ আলির দোকানে হামলা চালানো হয়েছে। জিনিসপত্র ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দলের বেশ কয়েকজন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের জানুবসান গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

    আইএসএফ নেতা জাহাঙ্গির আলি বলেন, এদিন কাজ বন্ধ হওয়ার পর আমরা ফিরে আসি। সেই সময় তৃণমূল কর্মীরা অতর্কিতে হামলা চালায়। আমরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলি।
  • Link to this news (বর্তমান)