• গরমের ছুটির পরেও ধুলিয়ানের বহু স্কুলে শুরু হয়নি পড়াশোনা, সমস্ত বিদ্যালয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর দখলে
    বর্তমান | ০৬ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: গ্রীষ্মের ছুটির শেষে গত সোমবার থেকেই স্কুলগুলিতে শুরু হয়েছে পঠনপাঠন। ব্যতিক্রম মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের ধুলিয়ান চক্রের একাধিক স্কুল। সাম্প্রতিককালে সামশেরগঞ্জের ধুলিয়ানে অশান্তির জেরে ধুলিয়ান পুর এলাকার সমস্ত স্কুলই রয়েছে কার্যত কেন্দ্রীয় বাহিনীর দখলে। ক্লাস রুম থেকে হল ঘর, এমনকী অফিস রুমেও রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। ফলে স্কুলে কার্যত অঘোষিত ‘ছুটি’। সোমবার স্কুলে এসেও কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রীকে ঘুরে যেতে হয়। শিক্ষকরাও স্কুলে এসে কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হন। আগামী জুলাই মাস পর্যন্ত স্কুলগুলিতে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। স্বাভাবিক কারণেই পঠনপাঠন চালু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

    জঙ্গিপুর মহকুমা স্কুল পরিদর্শক(মাধ্যমিক) সন্দীপ কোড়া বলেন, আপাতত গুরুত্বপূর্ণ ক্লাসগুলি স্কুলের ফাঁকা অংশে শুরু করতে বলা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোও হয়েছে। উপর মহলের নির্দেশ মতো পদক্ষেপ করা হবে।

    সামশেরগঞ্জের কৃষ্ণকুমার সন্তোষকুমার স্মৃতি বিদ্যাপীঠ, ধুলিয়ান বালিকা বিদ্যালয়, বাণীচাঁদ আগরওয়াল বালিকা বিদ্যালয়, দিঘরি হাইস্কুল ও ধুলিয়ান হাইমাদ্রসায় রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। পাশাপাশি কাঞ্চনতলা জেডিজে ইন্সটিটিউশনে রয়েছেন রাজ্য পুলিসের আধিকারিকরা। জওয়ানরা স্কুলের প্রায় সমস্ত ক্লাসরুম দখলে নিয়েছেন। ফলে পঠনপাঠনের জন্য ফাঁকা ক্লাসরুমই নেই। 

    কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত মার্চ মাসে স্কুলে পঠনপাঠন হয়। তারপর ঈদের ছুটি ঘোষণা হয়ে যায়। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে ধুলিয়ানে হিংসা ছড়িয়ে পড়লে স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে পড়ে। গত ৩০এপ্রিল থেকে অফিসিয়ালি গরমের ছুটি শুরু হয়। গ্রীষ্ম অবকাশের পর গত সোমবার থেকে ক্লাস চালু হয়। ধুলিয়ান শহর এলাকার কোনও হাইস্কুলেই হয়নি ক্লাস। যদিও কাঞ্চনতলা স্কুলে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে তৃতীয় তলার কয়েকটি ফাঁকা রুমে ক্লাস করার চেষ্টা করেন শিক্ষকরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই মাসুদ রহমান বলেন, দুর্গন্ধে ভরে গিয়েছে স্কুল চত্বর। পঠনপাঠনের পরিবেশ নেই। শৌচালয় থেকে শুরু করে কোনও কিছুই আমরা ব্যবহার করতে পারছি না। 

    কেকেএসকে স্মৃতি বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কবির বলেন, আমাদের শুধু স্কুল নয়, স্টাফ রুমও ব্যবহার করছেন জওয়ানরা। ফলে শিক্ষকদের বসারও জায়গা নেই। এভাবে স্কুল চালানো কোনওভাবেই সম্ভব নয়। ধুলিয়ান বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জয়শ্রী দত্ত বলেন, এই পরিস্থিতিতে ক্লাস সম্ভব নয়। অফিস রুম ছাড়া কোনও ঘরই ফাঁকা নেই।

    একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে কোনওকিছুই সুস্থভাবে করা যাচ্ছে না বলে স্কুলগুলি জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে অন্য কোথাও থাকার ব্যবস্থা করলে ক্লাস করা সম্ভব হবে। ক্লাস শুরু করা নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবক থেকে শিক্ষক শিক্ষিকারা। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)