রাত নামলেই বুনো শুয়োরের তাণ্ডব, নষ্ট হচ্ছে জমির ফসল, মাথায় হাত চাষির
বর্তমান | ০৬ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: নবদ্বীপের ইদ্রাকপুর গ্রামের চাষিদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে বুনো শুয়োরের দল। রাতের অন্ধকারে বিঘের পর বিঘের জমির পাট, ভুট্টা, লাল আলু,পটল সহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট করে দিচ্ছে। রাতের অন্ধকারে দলে দলে বেরিয়ে পড়ছে বুনো শুয়োরের দল। কখনও ফসল মাড়িয়ে,কখনও বা মাটি তুলে ক্ষতি করছে ফসলের। দিনের বেলায় নদী তীরবর্তী ঘন জঙ্গল বা নদীর চরে আশ্রয় নিচ্ছে। আর রাতের অন্ধকারে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বেরিয়ে পড়ছে।
মায়াপুর-বামুনপুকুর- ২ নম্বর পঞ্চায়েতের নদীবেষ্টিত গ্রাম ইদ্রাকপুর। এখানে অধিকাংশ গ্রামবাসী মূলত কৃষিজীবী।ভাগীরথী তীরবর্তী ওই এলাকার ডাঙা মাঠ,হুলোর মাঠ, মাঝের মাঠ, নিদয়ার মাঠ, গঙ্গার ধার চরের মাঠ প্রায় এক থেকে দেড় হাজারের বেশি জমিতে বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দু’বছর ধরে এই এলাকায় বুনো শুয়োরের কমবেশি উৎপাত চলছিল। তবে গত কয়েকমাস ধরে রাতের অন্ধকারে বুনো শুয়োরের দল কৃষিজমিতে মাটি খুঁড়ে নষ্ট করে দিচ্ছে জমির ফসল।
জানা গিয়েছে, ২০০০ সালের বন্যার পর থেকেই এই ইদ্রাকপুর গ্রামে ঢুকে পড়েছে বুনো শুয়োরের দল। এরা গ্রামের ভাগীরথী তীরে চড়ে বা ঝোপজঙ্গলে, ফরেস্টের জঙ্গলে,বড় বড় ঘাসের আড়ালে বা পুরনো আমবাগানে আশ্রয় নিয়েছিল। এখন সেই সব বুনো শুয়োরের সংখ্যা বেড়েছে।
স্থানীয় বাগপাড়ার বাসিন্দা সমীর ঘোষ বলেন, এই গ্রামের গঙ্গার ধার বরাবর তেঁতুলতলার চড়ে আমাদের জমি। এখন পাট, ভুট্টা,পটল বিভিন্ন সব্জি আছে। এই ফসলগুলোর ক্ষতি করছে। পাট গাছের গোড়ার মাটি উপড়ে দিচ্ছে। এমনকী দৌড়াদৌড়ি করে পাট নষ্ট করে দিচ্ছে। মায়াপুর-বামুনপুকুর-২ নম্বর পঞ্চায়েতের সদস্য তথা ইদ্রাকপুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণ ঘোষ বলেন,এই অঞ্চলে প্রায় লাল আলুমাটি থেকে উপড়ে দিচ্ছে, লাল আলুর চাষ তো প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভুট্টার মোচ নষ্ট করে দিচ্ছে। অন্যান্য গ্রামে ভুট্টা চাষ হলেও এখানে বুনো শুয়োরের উপদ্রবে ভুট্টার চাষ করতে পারছি না। ধানের বীজতলা নষ্ট করে দিচ্ছে। বিষয়টি আমরা বিডিও, কৃষিদপ্তর ও বনদপ্তরকে জানিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
ইদ্রাকপুর গ্রামের বাসিন্দা নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন কোনও উদ্যোগই নেয়নি। অভিযোগ পেয়েও কখনও দেখা যায়নি বনদপ্তর থেকে শুরু করে সরকারি কোনও আধিকারিককে।বনদপ্তরের কাছে আবেদন, অতিসত্বর শুয়োরগুলি ধরার ব্যবস্থা করুক। তা না হলে চাষিরা প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রতীকী চিত্র