• মহকুমায় দু’টি তাপবিদ্যুৎ, একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেঘ করলেই অন্ধকারে ডুব
    বর্তমান | ০৬ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: আকাশে মেঘ দেখা দিলেই চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গ্রাম থেকে শহরতলি অন্ধকারে ঢেকে থাকছে। গ্রীষ্মের ভ্যাপসা গরমে রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা। লোডশেডিংয়ের জেরে ক্ষুব্ধ রঘুনাথপুর মহকুমার বাসিন্দারা। তাঁরা বলেন, রঘুনাথপুর মহকুমায় রঘুনাথপুর এবং সাঁওতালডিহিতে দু’টি বৃহৎ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ড রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে গড়ে ওঠা পাঞ্চেত জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, বিদ্যুৎ দপ্তর এক মাসের বিল বাকি থাকলে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিতে তৎপর হয়। সেখানে ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে মানুষ বিদ্যুৎ দপ্তরের দিকে আঙুল তুলবে না কেন। 

    রঘুনাথপুর মহকুমা শাসক বিবেক পঙ্কজ বলেন, লোডশেডিং নিয়ে বিদ্যুৎ দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তীব্র গরমে এলাকাবাসী নাজেহাল। বাইরে বেরলে চাঁদিফাটা রোদ, আর ঘরের ভিতরে ভ্যাপসা গরম। বর্তমানে কিছুদিন ধরে আবার বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে ভ্যাপসা গরম বেড়েছে। এসি, কুলার, ফ্যানই সহায় হয়ে উঠেছে। কিন্তু ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অস্বস্তি বেড়েছে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে রঘুনাথপুর মহকুমায় প্রায়শই বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকাগুলির মানুষদের। ওই এলাকাগুলিতে বিভ্রাট দেখা দিলে সহজে বিদ্যুৎ দপ্তরে গাড়ি পৌঁছয় না। আবার বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীদের ফোন করলেও সদুত্তর পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ।এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে অরুণ চার, পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিকেলে সামান্য বৃষ্টি হলেই সারারাত বিদ্যুৎ থাকে না। আবার কখনও আকাশে মেঘ দেখ দিলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। ফলে যে সব বাড়িতে বৃদ্ধ, শিশু ও অসুস্থ মানুষ রয়েছে তাদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে ওঠে। যদিও বিদ্যুৎ দপ্তর লোডশেডিং বিষয়টি মানতে নারাজ। সাঁতুড়ি ব্লকের বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিক (ষ্টেশন ম্যানেজার) শামিম আলি মোল্লা বলেন, বর্তমানে বেশ কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি ও বজ্রপাত হচ্ছে। যার ফলে বিদ্যুৎবাহী তার সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন কিছু জায়গায় ফল্ট হয়ে যায় যা খুঁজে বের করতে কর্মীদের নাজেহাল হতে হয়।

    যদিও এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিদ্যুৎ দপ্তরের ঠিকাদার সংস্থাগুলি মুনাফার জন্য ১০ জনের জায়গায় ছয় জন কর্মী দিয়ে কাজ চালাচ্ছে। যেখানে দু’টি গাড়ি দেওয়ার প্রয়োজন, সেখানে একটি গাড়ি দেওয়া হচ্ছে। কীভাবে মানুষ পরিষেবা পাবে! জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ নীলাঞ্জনা পট্টনায়ক বলেন, বর্তমানে জেলাজুড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা গিয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পরেই সমস্ত ব্লকের স্টেশন ম্যানেজার এবং জেলা বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। প্রয়োজনে আবার বৈঠক করা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)