• কর্মী সম্মেলনে উষ্মা প্রকাশ কীর্তি আজাদের
    বর্তমান | ০৬ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: দলীয় কর্মসূচির খবর ব্লক থেকে জানতে হচ্ছে। জেলা নেতৃত্ব কোনও খবর দিচ্ছে না। দুর্গাপুর-২নম্বর সাংগঠনিক ব্লকের কর্মী সম্মেলনে হাজির হয়ে উষ্মা প্রকাশ করলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ কীর্তি আজাদ। বুধবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুরের রবীন্দ্রভবনে হওয়া কর্মী সম্মেলনে কোনও রকম রাখঢাক না করে তিনি বলেন, মনে হয় জেলা সভাপতি আমার প্রতি ‘নারাজ’ আছেন। চার-পাঁচ মাস কোনও কথাই বলেননি। বিবাহবার্ষির্কীর শুভেচ্ছারও উত্তর দেননি। সংগঠনের খবর দেওয়া হলে ভালো। না হলে নিজেই কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে চলে যাব।

    ব্লক স্তরের সাংগঠনিক সভায় জেলার দুই শীর্ষ নেতার এই মন কষাকষি কর্মী মহলে চাঞ্চল্য ছড়ায়। কর্মী সম্মেলনে তাঁকে মঞ্চে বসিয়ে কীর্তি আজাদ একথা বললেও সরাসরি তার কোনও উত্তর দেননি জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। উল্টে তিনি বলেন, ২০২৪সালে কীর্তি আজাদকে জেতাতে কী ভীষণ পরিশ্রম করতে হয়েছে সবাইকে। যদিও পরে তিনি বলেন, কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকতে পারে। কীর্তিজির সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করে নেওয়া হবে।

    তবে শীর্ষ স্তরেই যে শুধু সমন্বয়ের সুর কেটেছে, তা নয়। জেলার একাধিক ব্লক সম্মেলন থেকে সামনে এসেছে মহিলা ও মাদার সংগঠনের মধ্যে দূরত্ব। দুর্গাপুর-২নম্বর ব্লকের সভানেত্রী মুনমুন সরকারও একই অভিযোগ করেন। একই অভিযোগ শুনতে হয়েছিল রানিগঞ্জ ও হীরাপুরের ক্ষেত্রেও। যদিও এক্ষেত্রে জেলা সভাপতি তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বলেই নেত্রীদের দাবি।

    এদিনের কর্মী সম্মেলনে ব্লকের যুব সভাপতি রাজু সিং মাইক হাতে সদ্য দুর্গাপুর মহকুমার আইএনটিটিইউসির কোর কমিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তখন জেলা সভাপতি তাঁকে ধমক দেন।

    তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে দুর্গাপুর-২নম্বর ব্লক অত্যন্ত তৎপর্যপূর্ণ। দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের একটি বড় অংশ এই ব্লকের অন্তর্গত। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই ব্লক থেকেই তৃণমূল কংগ্রেস ২৮হাজার ভোটে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থীর থেকে পিছিয়ে ছিল। ২০১৯ সালে আবার এই ব্লক থেকেই বিজেপি তৃণমূল প্রার্থীর থেকে ২৯হাজার ভোটে লিড পায়। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে অবস্থার বদল হতে শুরু হয়েছে। ২০২১ সালে এই ব্লকে বিজেপির থেকে তৃণমূল ন’হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল। শেষ লোকসভা নির্বাচনে সেই ব্যবধান কমে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৪০০। ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় বলেন, বিরোধীদের ভোট ক্রমশ কমছে। আর আমাদের ভোট বাড়ছে। সবাই এক হয়ে লড়লে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচ঩নেই আমরা এক ভোটে হলেও লিড দেব।

    এদিন সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে কীর্তি আজাদ বলেন, ২৫০কিলোগ্রাম আরডিএক্স বোঝাই গাড়ির জন্য পুলওয়ামায় ৪০জন সেনার মৃত্যু হয়েছিল। সেই বিস্ফোরক বোঝাই গাড়িটি গুজরাতের ছিল। এনিয়ে তদন্ত কী হল, জানতে পারলাম না। কাশ্মীর সর্বক্ষণ নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে থাকে। সেখানে তিনদিন আগে কেন পহেলগাঁওয়ের নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল? বিজেপি দেশ চালাতে পারে না। শুধু হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে ঝামেলা লাগাতে পারে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)