শাসনে দিনের আলোয় ঠিকাকর্মী সেজে সরকারি পাইপ চুরি, পুলিসের জালে ৩
বর্তমান | ০৬ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: রাতে নয়, চুরির ‘প্রাইম টাইম’ হল দিনের আলো। কেননা, দিনের আলোয় চুরি করলে মানুষ সেভাবে সন্দেহ করে না। সেই চিন্তাভাবনা থেকেই সরকারি পাইপ চুরি করছিল একটি গ্যাং। স্থানীয়রা প্রশ্ন করলে, নিজেদের ঠিকা সংস্থার কর্মী বলে পরিচয় দিত তারা। কিন্তু, সেই ফন্দি ধরে ফেলল শাসন থানার পুলিস। তারা এই গ্যাংয়ের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের জেরা করে এই চক্রের ‘মাথা’র খোঁজ করছেন তদন্তকারীরা।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে সরকারিভাবে। ফলে রাস্তার ধারে পাইপলাইন বসানোর কাজ করছে পিএইচই দপ্তর। ঠিকাদার সংস্থা রাস্তার পাশে গর্ত করে পাইপ পাতার কাজ করেছে। সম্প্রতি ফলতি-বেলিয়াঘাটা পঞ্চায়েতের সন্ডালিয়ায় ঠিকাদার সংস্থার নজরে আসে লোহার পাইপ চুরি যাচ্ছে। এ নিয়ে মে মাসের শেষে তারা শাসন থানায় অভিযোগ জানায়। তদন্তে নেমে পুলিস রাজু ঘোষ ও সঞ্জীব রাহা নামের দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। তারা প্রকাশ্যে দিনের আলোয় লোহার পাইপ চুরি করতে এসেছিল। ধৃতদের বাড়ি বারাসতে। তাদের জেরা করে ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে জানা যায় কুমার অভিজিৎ নামে এক যুবকের নাম। তাকে ধরতে হন্যে হয়ে খুঁজছিল পুলিস। অবশেষে, গত রবিবার তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় তারা। তাকে জেরা করে পুলিস জানতে পারে, বারাসত ২ নম্বর ব্লক ছাড়াও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে তারা পানীয় জল প্রকল্পের পাইপ চুরি করে বিক্রি করে দেয়। অভিজিৎ জেরায় জানিয়েছে, এর পিছনে আরও কয়েকজন রয়েছে। বুধবার অভিজিৎকে সঙ্গে নিয়ে তার বারাসতের বাড়িতে হানা দিয়ে নগদ ৬৫ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে পুলিস। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজু ও সঞ্জীব মূলত এলাকা চষে পাইপের সন্ধান দিত এবং গাড়িতে তোলা বা নামানোর কাজ করত। দিনের যে সময় রাস্তায় লোকজন বেশি থাকত, তখন ঠিকাদার সংস্থার লোক সেজে তারা ওই পাইপ তুলে নিয়ে চলে যেত। ফলে সাধারণ মানুষ কেউ সন্দেহ করতেন না। কেউ জিজ্ঞাসা করলে তারা সদর্পে বলত, আমরা ঠিকাদারের লোক। এই পাইপ অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে কাজ করা হবে। এ বিষয়ে বারাসত পুলিস জেলার সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া বলেন, এটি সংগঠিত অপরাধ। তদন্ত চলছে। এর পিছনে যারা রয়েছে, তাদের খোঁজার জন্য চেষ্টা চলছে। ধৃত কুমার অভিজিৎ - নিজস্ব চিত্র