পুজোতেই পূর্ণ দৈর্ঘ্যের কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে, বেলঘরিয়া থেকে কাঁপা, ৪০ কিমি মাত্র ৪০ মিনিটে
বর্তমান | ০৬ জুন ২০২৫
প্রীতেশ বসু, কলকাতা: পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ‘সুপারফাস্ট’ কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে এবার রাজ্যবাসীর জন্য শারদীয়ার উপহার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মাত্র ৪০ মিনিটেই অতিক্রম করা যাবে ৪০ কিলোমিটার পথ। কল্যাণী, বহরমপুর তো বটেই, সড়ক পথে উত্তরবঙ্গ পৌঁছানোও হবে আরও সহজ এবং যানজটহীন। টার্গেট নেওয়া হয়েছে, চলতি বছর আগস্ট মাসে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযুক্তকরণ সম্পন্ন করে বড় জাগুলিয়াতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে এই সুপারফাস্ট রোডকে মেলানোর। এরপর আরও কিছুটা সময় হাতে নিয়ে দুর্গাপুজোর আগেই রাজ্যবাসীর জন্য সরকারিভাবে পূর্ণ দৈর্ঘ্যের এই রাস্তা খুলে দিতে চলেছে নবান্ন।
কেন সুপারফাস্ট? কারণ, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে জংশন থেকে কাঁচরাপাড়ার কাঁপা মোড় হয়ে বড় জাগুলিয়া পর্যন্ত যেতে একটি ট্রাফিক সিগন্যালেও দাঁড়াতে হবে না কোনও গাড়িকে। প্রতিটিতেই রয়েছে এলিভেটেড করিডর বা ছয় লেনের আন্ডারপাস। ফলে একবার বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরলে সাঁই সাঁই করে ছুটবে গাড়ি। বেলঘরিয়া-কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে জংশন থেকে কাঁপা মোড় হয়ে বড় জাগুলিয়া পর্যন্ত এই রাস্তার সম্প্রসারণের কাজে খরচ হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। মুখ্যমন্ত্রীর এই স্বপ্নের প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করছে রাজ্য পূর্ত দপ্তর। এক নজরে দেখতে গেলে সম্পূর্ণ রাজ্যের খরচের তৈরি এই ‘স্পিড রোড’ সামগ্রিক ভাবে অনেকগুলি উদ্দেশ্য পূরণ করবে। ১) বারাসাতের মতো এলাকার যানজট এড়িয়েই এগিয়ে যাওয়া যাবে উত্তরবঙ্গের দিকে ২) নদীয়া, বর্ধমান, হাওড়া, হুগলির একটি বড় এলাকা থেকে কম সময়ে পৌঁছনো যাবে কলকাতা বিমানবন্দরে ৩) দক্ষিণেশ্বর-বিমানবন্দর সংযোগকারী বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে যাওয়া যাবে নির্ঝঞ্ঝাটে। পূর্ত দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা জানাচ্ছেন, এই প্রকল্প আসলে দক্ষিণবঙ্গের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় সম্পূর্ণ একটি নতুন ‘সার্কিট’ তৈরি করল। সাধারণভাবে দেখলে মনে হবে, এই রাস্তার ফলে বেলঘরিয়া-কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে জংশন থেকে বড় জাগুলিয়া পর্যন্ত সুখযাত্রার অনুভূতি। কিন্তু, মনে রাখতে হবে কলকাতার দিক থেকে গেলে কাঁপা মোড়ের ডানদিকের রাস্তা যেমন জাতীয় সড়ক ৩৪’এর সঙ্গে মিলিত হচ্ছে, ঠিক তেমনই বাঁ দিকের রাস্তা গিয়ে মিলছে নির্মীয়মাণ নয়া ঈশ্বরগুপ্ত সেতুর সঙ্গে। এই সেতুর পূর্ব পারে কল্যাণী। আর পশ্চিমে হুগলির বাঁশবেড়িয়া। ফলে হুগলির বিস্তীর্ণ অঞ্চল তো বটেই, বর্ধমান থেকেও এই সেতু ধরে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে পড়লেই একেবারে ন্যূনতম সময়ে পৌঁছে যাওয়া যাবে বিমানবন্দর বা কলকাতায়।
প্রশাসনের বক্তব্য, দুই এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগস্থল থেকে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে ধরে এগলেই একটি দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ফ্লাইওভার তৈরির কাজ চলছে। যা নামবে নিমতা মোড় পার করে। জুলাই মাসেই সেই শেষ হয়ে যাবে। বাকি কাজ সম্পূর্ণ। অন্যদিকে, কাঁপা মোড় থেকে বড় জাগুলিয়া পর্যন্ত রাস্তা এবং এলিভেটেড করিডরে পর্যাপ্ত আলো সুনিশ্চিত করার কাজ চলছে। এর জন্য প্রয়োজনীয় সময়সীমা হিসাব করেই, আগষ্ট মাসে এর উদ্বোধন করার অনুরোধ করা হবে মুখ্যমন্ত্রীকে।