এই সময়: আগে থেকে সব কিছু ঠিক থাকলেও আপাতত দিল্লি-যাত্রা পিছিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী সোমবার তাঁর দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করারও সম্ভাবনা ছিল।
তবে আপাতত সেই দিল্লি-যাত্রা পিছিয়েছে। সোমবার রাজ্য বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের উদ্দেশে এই অধিবেশন ডাকা হয়েছে।
অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। ফলে সে দিন যে তিনি দিল্লি যাচ্ছেন না, তা এক রকম নিশ্চিত। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের নতুন সময় পাওয়া গেলে আগামী সপ্তাহের শেষের দিকে তিনি দিল্লি যেতে পারেন।
নীতি-আয়োগের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকেন না বলে গত সপ্তাহে বাংলা সফরে এসে আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী কটাক্ষ করেছিলেন। পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়েছিলেন, বৈঠক তাঁকে বলতে দেওয়া হয় সবার শেষে।
আগের বৈঠকে মাত্র চার মিনিট বলার পরে তাঁর মাইক্রোফোনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এমন হলে তিনি কেন যাবেন, পাল্টা সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। তবে বাংলার বকেয়া আদায় নিয়ে তিনি যে সরব হবেন, তাও জানিয়েছিলেন। নবান্ন সূত্রের খবর, মূলত সেই জন্যেই তাঁর দিল্লি যাওয়ার কথা।
রাজ্যের দাবি, বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে প্রাপ্য প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা। সেই বকেয়া মেটানো নিয়ে বার বার সরব হয়েছে রাজ্য। তৃণমূলের তরফে দিল্লিতেও আন্দোলন হয়েছে। ১০০ দিনের বকেয়া মেটানোর দাবিতে উপভোক্তাদের নিয়ে দিল্লি গিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আবাস যোজনা-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়া রয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ২০২০ থেকে কেন্দ্রের কাছ থেকে অনেক প্রকল্পেই রাজ্য প্রাপ্য পায়নি। শাসকদলের বক্তব্য, বার বার বকেয়ার দাবিতে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে, সাড়া মেলেনি।
রেড রোডে অবস্থান-বিক্ষোভে বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে রাজ্য সরকার নিজেদের ভাঁড়ার থেকে ১০০ দিনের কাজের উপভোক্তাদের টাকা মিটিয়েছে। আবাস যোজনার টাকাও রাজ্যের তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে।
আগামী বছর বিধানসভা ভোট। তার আগে বকেয়ার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান মমতা। গত লোকসভা ভোটে কেন্দ্রের বঞ্চনাকে প্রচারে পুরোমাত্রায় ব্যবহার করেছিল রাজ্যের শাসকদল। বিধানসভা ভোটের আগে যদি রাজ্যের বকেয়া কেন্দ্র না মেটায়, তা হলে ফের তা ভোটের ইস্যু হতে পারে।