• দু’ঘণ্টা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ, কার্যালয়ে দরজা এঁটে আরও ঘণ্টা দুই! বেরিয়ে মুখ খুললেন কেষ্ট, দুই বাক্যে প্রতিক্রিয়া
    আনন্দবাজার | ০৬ জুন ২০২৫
  • বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে ফোনে হুমকি এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের ঘটনার সাত দিন পরে এসডিপিও অফিসে হাজিরা দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। বৃহস্পতিবার বিকেল সওয়া ৩টের পর এসডিপিওর দফতরে যান তিনি। ঘণ্টা দুয়েক সেখানেই ছিলেন। বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ এসডিপিও দফতর থেকে বেরিয়ে অনুব্রত সোজা চলে যান বোলপুর তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে। সেখানেও প্রায় দু’ঘণ্টা ছিলেন। এই পর্যন্ত কেষ্টর (অনুব্রতের ডাক নাম) মুখে কুলুপ আঁটা ছিল। সাংবাদিকদের প্রশ্নে ‘জর্জরিত’ হয়েও মুখ খোলেননি। সন্ধ্যায় দলীয় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার পর অবশেষে তিনি নীরবতা ভাঙলেন। জবাব দিলেন দু’টি বাক্যে। বললেন, ‘‘আমি আগে দু’দিন দেখি! তার পর বলব। আগে চালচালন দেখি! তার পর।’’

    কী দেখবেন? কার চালচলন দেখবেন? এসডিপিও দফতরের ভিতর পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল কি? এ সব প্রশ্নের আর কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। দলীয় কার্যালয় থেকে অনুব্রতের গাড়ি সটান এগিয়ে গিয়েছে তাঁর বাড়ির দিকে। আর কোনও মন্তব্যই করতে চাননি তিনি।

    অনুব্রত এবং বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারের কথোপকথনের একটি ‘অডিয়ো ক্লিপ’ গত বৃহস্পতিবার সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। সেখানে আইসি-কে গালিগালাজ ও কুকথা বলার অভিযোগ উঠেছিল কেষ্টর বিরুদ্ধে। পরে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে ‘নিঃশর্ত ক্ষমা’ও চান কেষ্ট। একই সঙ্গে ‘চক্রান্তে’র অভিযোগও তোলেন। পুলিশও মামলা দায়ের করে তাঁকে শনিবার এসডিপিও-র (বোলপুর) দফতরে হাজিরার নোটিস পাঠায়। পর পর দু’দিন এই হাজিরা দেননি অনুব্রত। নিজে না-এসে থানায় পাঠিয়েছেন আইনজীবীকে। তাঁরা জানিয়েছেন, অনুব্রত অসুস্থ। আইনজীবী মারফত মেডিক্যাল রিপোর্টও জমা দেওয়া হয়েছিল। এর পর অবশেষে বৃহস্পতিবার হাজিরা দিলেন তিনি।

    থানা থেকে বেরোনোর পরে অনুব্রতকে ঘিরে ধরেছিলেন সাংবাদিকেরা। কিন্তু কোনও মন্তব্য না-করে তিনি গাড়িতে উঠে পড়েন। দলীয় কার্যালয়ে ঢুকেও সাংবাদিকদের এড়াতে দরজা বন্ধ করে দেন তিনি। সেখান থেকে বেরিয়ে জানালেন, আগে চালচলন দেখতে চান তিনি।

    পুলিশ সূত্রে খবর, অনুব্রতের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাজেয়াপ্ত হয়েছে আইসি লিটনের দু’টি ফোন। আইসি-র সঙ্গে অনুব্রতের কথোপকথনের ‘অডিয়ো’ কী ভাবে ছড়াল, তা তদন্ত করে দেখছে বীরভূম জেলা পুলিশ। সূত্রের দাবি, আইসির বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)