প্রকাশ্য আদালতে উঠে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে সিবিআইকে দুষছিলেন ১০ মাস আগে কন্যাহারা এক বাবা। পাশে দাঁড়িয়ে প্রৌঢ়কে সান্ত্বনা দিচ্ছেন তাঁর স্ত্রী। তাঁরও দু’চোখ ছলছলে। বৃহস্পতিবার দুপুরে শিয়ালদহ আদালতে এ ভাবেই দেখা গেল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিহত, ধর্ষিতা ডাক্তার-কন্যার মা-বাবাকে। মাল্টি ইনস্টিটিউশনাল মেডিক্যাল বোর্ড (এমআইএমবি) রিপোর্ট সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে শিয়ালদহের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্টে হাজির ছিলেন আর জি করের চিকিৎসক-পড়ুয়ার বাবা-মা।
আদালত সূত্রের খবর, কন্যাহারা দম্পতিই সিবিআইয়ের কাছে এমআইএমবি রিপোর্ট চেয়ে আর্জি জানিয়েছিলেন। এ দিন সেই সংক্রান্ত শুনানিতে সিবিআইয়ের আইনজীবী পার্থসারথি দত্ত বলেন, ‘‘বিচারের সময় এই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। হাই কোর্টকেও দেওয়া হয়েছে।’’ এর পরেই উঠে দাঁড়ান আর জি করের নির্যাতিতার বাবা। বিচারক অরিজিৎ মণ্ডলকে বলেন, ‘‘আপনি বার বার আমাদের বলেছেন, নিজেদের ব্রাত্য ভাববেন না। কিন্তু উনি (আইনজীবী) বলছেন, দিয়ে দিয়েছি, ঝামেলা মিটে গিয়েছে। এই হচ্ছে মনোভাব!’’ বিচারক ওই বৃদ্ধকে বলেন, ‘‘সেটা দেখার জন্য কোর্ট আছে।’’ নিহত ডাক্তার-কন্যার বাবা এর পরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সিবিআই আমাদের কোর্টে ঢুকতে দেয়নি। সাক্ষীর সময়ে কী বলব, কী বলব না সিবিআই শিখিয়ে দিয়েছে। ১০ মাস হল, মেয়েকে হারিয়েছি। ওঁদের কিচ্ছু হয়নি। সিবিআই টিমের এক জন বলেছেন, আপনার মেয়ে মারা গিয়েছে। যা করার আপনাকেই করতে হবে।’’ বলতে বলতে তিনি কেঁদে ফেলেন। এর আগেও আদালতে কাঁদেন ওই দম্পতি।
কন্যাহারা মা-বাবার আইনজীবী অমর্ত্য দে, রাজদীপ হালদারেরা বলেছেন, ‘‘এমআইএমবি রিপোর্ট আমরা পেয়েছি। কিন্তু রায়ে ন’পাতার রিপোর্টের কথা বলা হলেও আমরা আট পাতার রিপোর্ট পেয়েছি।’’ প্রসঙ্গত এই মামলায় ১০ জুন সিবিআইয়ের তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার কথা।