প্রেমিকা দশম শ্রেণির পড়ুয়া, প্রেমিক ৫০ পার বিবাহিত প্রৌঢ়, বিয়ের কথা তুলতেই যা হল......
আজকাল | ০৬ জুন ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানা এলাকার দশম শ্রেণির ছাত্রী খুনের ঘটনার কিনারা করল রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ। এই খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে দশম শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোরীর প্রৌঢ় প্রেমিককে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জঙ্গিপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃত ওই ব্যক্তির নাম গোলাপ শেখ (৫২)। তার বাড়ি রঘুনাথগঞ্জ থানার অন্তর্গত রানীনগর পঞ্চায়েতের ভাটুপাড়া গ্রামে। ধৃত ওই ব্যক্তির ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করে শুক্রবার তাকে জঙ্গিপুর আদালতে পেশ করা হচ্ছে।
জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এক আধিকারিক জানিয়েছেন ,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত ওই ব্যক্তি দশম শ্রেণির পড়ুয়াকে খুনের ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, প্রথমে ওই পড়ুয়াকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য গলার নলি কেটে দেওয়া হয়েছিল। যদিও অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই কিশোরকে ধর্ষণ করেনি বলে দাবি করেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, খুনের ঘটনার পর গোলাপ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নেওয়ার জন্য জঙ্গিপুরে এসেছিল গোলাপ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ তখন তাকে গ্রেপ্তার করে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার সকালে রঘুনাথগঞ্জের ভাটুুপাড়া এলাকায় ওই কিশোরীর গলাকাটা অর্থনগ্ন দেহ উদ্ধার হয়। তদন্ত নেমে পুলিশ জানতে পারে সামশেরগঞ্জ থানার অন্তর্গত মহিষাস্থলী গ্রামের বাসিন্দা ওই কিশোরী সোমবার স্কুলে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়ে। এরপর সে আর বাড়ি ফিরে যায়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই কিশোরীর সঙ্গে কয়েক মাস আগে কেরালায় পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কর্মরত গোলাপ শেখের একটি ফোন কলের সূত্রে পরিচয় হয়। ওই স্কুল ছাত্রী নিয়মিত এক প্রতিবেশী মহিলার ফোন ব্যবহার করে গোলাপের সঙ্গে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলত।
প্রায় আড়াই বছর পর গত সপ্তাহে কেরল থেকে মুর্শিদাবাদে গ্রামের বাড়িতে ফিরেছে গোলাপ শেখ। কেরালা থেকে প্রেমিকের বাড়ি ফিরে আসার খবর পাওয়ার পরই ওই স্কুল ছাত্রী তার সঙ্গে দেখা করার জন্য ফোনে জোরাজুরি করতে থাকে।
খুনের ঘটনার এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গোলাপ জানিয়েছেন সোমবার দু'জনে দেখা করার পর ওই স্কুলছাত্রী তাকে বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু গোলাপ শেখের বাড়িতে তার স্ত্রী ছাড়াও বিবাহিত পুত্র-কন্যা থাকায় সে ওই কিশোরী ছাত্রীকে বিয়ে করতে রাজি ছিল না।
পুলিশ সূত্রের খবর,গোলাপ ওই কিশোরীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতে অস্বীকার করায় সে গভীর রাত পর্যন্ত ভাটুপাড়ার একটি মাঠে বসে থাকে এবং গোলাপকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। পুলিশ সূত্রের খবর, বাড়িতে বিবাহিত ছেলে-মেয়ে এবং স্ত্রী এই সম্পর্ক যে মেনে নেবে না তা আগে থেকেই জানত গোলাপ। বহুবার বোঝানোর পরও ওই কিশোরী বাড়ি ফিরে যেতে রাজি না হওয়ায় রাগের মাথায় গোলাপ প্রথমে তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারাল অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে দেয়।