• বাংলার ছেলেমেয়েরা মিড ডে মিল খাচ্ছে না কেন? রাজ্যের কাছে জবাব তলব মোদী সরকারের
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৬ জুন ২০২৫
  • পশ্চিমবঙ্গের সরকার পরিচালিত, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং সরকার পোষিত স্কুলগুলির পড়ুয়ারা কি মিড ডে মিল খেতে চাইছে না? নাকি অন্য কোনও কারণে তাদের কাছে সরকারি এই ব্যবস্থাপনা পৌঁছাচ্ছে না? তা না হলে কেন গত শিক্ষাবর্ষে সামগ্রিকভাবে রাজ্যের প্রায় ৩১ শতাংশ স্কুলপড়ুয়া নথিভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও মিড ডে মিল খায়নি? বিষয়টি নজরে আসতে নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে জবাব তলব করেছে তারা।

    সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা তথ্য বলছে, সংশ্লিষ্ট সরকারি স্কুলগুলিতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মিড ডে মিল দেওয়া হয়। সেই হিসাব অনুসারে, গত শিক্ষাবর্ষে মিড ডে মিলের আওতায় নথিভুক্ত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল - ১ কোটি ১৩ লক্ষ ৪৪ হাজার ১৪৬। অথচ, মিড ডে মিল খেয়েছে বা পেয়েছে - ৭৭ লক্ষ ৯১ হাজার ৯৪৬ জন পড়ুয়া।

    অর্থাৎ, গোটা রাজ্যের নিরিখে পরিমাণটা হল - ৬৯ শতাংশ। আবার, কয়েকটি নির্দিষ্ট জেলা - যথা - কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, মালদা, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমান এবং উত্তর ২৪ পরগনায় এই পরিমাণটা আরও কম! মাত্র ৫০ শতাংশ মিড ডে মিলের আওতায় নথিভুক্ত পড়ুয়ার সংখ্যা আরও কমে হয়েছে - ৮০ লক্ষের কিছু বেশি।

    স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, কেন এবং কীভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি হল। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে রাজনীতির লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যেমন বলেছেন, 'বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকেও কাগজর কাটিং-সহ আমার বক্তব্য পাঠিয়েছি। তৃণমূলের লোকেরা মিড ডে মিলের চাল চুরি করছে। ১০০ শতাংশ দেখিয়ে চাল নিচ্ছে। আর ৫০ শতাংশ চাল রান্না হচ্ছে।'

    শিক্ষা মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য হল, '৫০ শতাংশ বাচ্চা মিড ডে মিল খাচ্ছে না। মিড ডে মিল প্রকল্পে কেন্দ্র যে টাকা দেয়, তার ৪ হাজার কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। রাজ্য খরচই করেনি। সেই টাকা কোথায় যাচ্ছে, কী হচ্ছে, আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না।'

    গেরুয়া শিবিরের আক্রমণের জবাবে তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তী বলেন, 'মিড ডে মিল প্রকল্পে দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সেরা কাজ করেছে বলে লিখিতভাবে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তখন শুভেন্দু অধিকারীর গাত্রদাহ হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে মিড ডে প্রকল্পে এই বাংলার ছেলেমেয়েরা সপ্তাহে একদিন মাংস পাচ্ছে। একদিন মরশুমি ফল পাচ্ছে। বাংলার মিড মে মিলে খাবারের মান এতটাই উন্নত যে কেন্দ্র এসে শংসাপত্র দিচ্ছে।'

    বিজেপির যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, '২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ভারতবর্ষের বড় রাজ্যগুলির তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে মিড ডে মিলের অবস্থা যথেষ্টই ভাল। পশ্চিমবঙ্গে যেখানে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম এন্ট্রি অনুযায়ী মিড ডে মিলের কভারেজ ৬৯ শতাংশ, সেখানে বিহারে ৪২ শতাংশ, গুজরাটে ৬৪ শতাংশ, রাজস্থানে ৫২ শতাংশ এবং উত্তরপ্রদেশে ৬৪ শতাংশ।'
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)