শ্বাসকষ্টে বিমানে মৃত্যু, অক্সিজেন দিতে ব্যর্থ, ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৬ জুন ২০২৫
প্রায় এক দশক আগে বিমানে শ্বাসকষ্টে মৃত্যু হয়েছিল কলকাতার আইনজীবী সবিতা রায়ের। সম্প্রতি রাজ্য উপভোক্তা আদালত সেই ঘটনায় বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে রায় দিয়ে মৃতার পরিবারকে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল। এছাড়াও, ২০ হাজার টাকা মামলার খরচ দেওয়ার নির্দেশ দিল।আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিমান সংস্থাটির পরিষেবা ছিল অপর্যাপ্ত। মামলার রায়ে অক্সিজেন সরবরাহে গাফিলতি এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষিত কর্মীর অভাবকেই সবিতা রায়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয়েছে।
জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালে। পুজোর ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে লেহ গিয়েছিলেন সবিতা। ১২ অক্টোবর সকালে নয়াদিল্লি ফেরার পথে লেহ বিমানবন্দরে হঠাৎ শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করেন তিনি। তাঁর স্বামী কিরণ শঙ্কর রায় আদালতে জানান, যদিও বিমান সংস্থা অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল তবে সিলিন্ডারটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। তাছাড়া, শারীরিক অসুস্থতার মধ্যেও সবিতাকে হুইলচেয়ারের সাহায্য না দিয়ে তাঁকে হাঁটতে বাধ্য করা হয়েছিল।
এদিকে, বিমান সংস্থার দাবি ছিল, সবিতা শারীরিকভাবে ভ্রমণের উপযুক্ত ছিলেন এবং লেহের ঠান্ডায় পর্যাপ্ত পোশাকের অভাবে তিনি অসুস্থ হন। যদিও আদালতে প্রমাণিত হয়েছে, একদিন আগেই এক চিকিৎসক সবিতাকে পরীক্ষা করে ভ্রমণের উপযুক্ত বলে শংসাপত্র দিয়েছিলেন।
মামলার রায়ের প্রতিলিপি থেকে জানা যায়, বোর্ডিংয়ের সময় সবিতাকে একটি পোর্টেবল অক্সিজেন ক্যান দেওয়া হয়। সেটি পর্যাপ্ত ছিল না। সকাল ৮.২৮ টার দিকে বিমানের দরজা বন্ধ হওয়ার পরই সবিতা তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করেন। পাশে থাকা এক যাত্রী ছিলেন পেশায় চিকিৎসক। তিনি সিপিআর দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সকাল ৮.৪২ টা নাগাদ তাঁর অবস্থার অবনতি হয় এবং বিমানটি ফিরে এসে সকাল ৮.৫৫ টায় লেহ বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে। সেখান থেকে সেনা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে আদালত রায়ে জানিয়েছে, সবিতার বয়স ও উপার্জনের ক্ষমতা বিচার করে এই ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হয়েছে। বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তারা পরিবারকে বিনামূল্যে থাকার ব্যবস্থা ও অন্যান্য সহায়তা দিয়েছিল।তবে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, যথাযথ পরিষেবা না দেওয়া এবং হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা না করাই এই মৃত্যুর মূল কারণ। অক্সিজেন সিলিন্ডার অকেজো থাকায় জীবন রক্ষা করা যায়নি বলেই পর্যবেক্ষণ রাজ্য উপভোক্তা আদালতের।