• চন্দননগরে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা গোটা পরিবারের! নেপথ্যে আর্থিক অনটন?
    এই সময় | ০৭ জুন ২০২৫
  • হাতে টাকা নেই। পরিবারে রোজগেরে কেউ নেই। সংসার চলবে কী ভাবে? এই চিন্তাই কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল। শেষে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন বৃদ্ধ দম্পতি ও তাঁদের একমাত্র মেয়ে। প্রাথমিক ভাবে অন্তত পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে। শুক্রবার সকালে চন্দননগরের বৈদ্যপোতা এলাকার ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘুমের ওষুধের ওভারডোজে সুনীতা দাস (৮৩)-এর মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি তাঁর স্বামী একেন্দ্র নাথ দাস (৮৭)। তাঁদের মেয়ে শর্মিষ্ঠার (৪৩) শারীরির অবস্থা স্থিতিশীল। তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

    প্রতিবেশীরা বলছেন, বাড়িতে মেয়েকে নিয়ে থাকতেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি। একটা সময়ে কয়লার ব্যবসা করতেন। আর্থিক অবস্থাও স্বচ্ছল ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে অবস্থা খারাপ হয়। জমানো টাকা ভেঙেই এতদিন সংসার চলছিল। কিন্তু ভবিষ্যতে কী হবে? একমাত্র মেয়ের কী ভাবে চলবে? এই সব সাত-পাঁচ ভাবনাতেই গত কয়েকদিন ধরে অস্থির থাকতেন। অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরেই অবসাদে ভুগছিলেন ওই বৃ্দ্ধ। তারপর এ দিন সকালে সপরিবারে ঘুমের ওষুধ খান বলেই দাবি স্থানীয়দের।

    মেয়ে শর্মিষ্ঠাই প্রতিবেশীদের বাড়ি ছুটে গিয়েছিলেন। তিনিও ঘুমের ওষুধ খান। রীতিমতো টলছিলেন। ওই অবস্থাতেই প্রতিবেশীদের বলেন, ‘আমার মা মারা যাবে, তোমরা বাঁচাও।’ ছুটে যান সবাই। দেখেন অচৈতন্য অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছেন বৃদ্ধ দম্পতি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের ভর্তি করা হয় চন্দননগর হাসপাতালে। সেখানেই বৃদ্ধাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

    বৃদ্ধের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। শর্মিষ্ঠাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সংসারে টানাটানি চলছে। তাই সবাই মিলে ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলাম।’ সঙ্গেই ছিলেন আত্মীয় আরণ্যক দাস। তিনি বলছেন, ‘প্রতিবেশীদের থেকে খবর পেয়ে ছুটে এসেছি। পিসিমার মৃত্যু হয়েছে। পিসেমশাই অসুস্থ। দিদিকে বাড়ি ফিরিয়ে এনেছি। এখন দেখা যাক কী হয়!’ এই প্রসঙ্গে এসিপি সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তদন্ত চলছে।’

  • Link to this news (এই সময়)