হুমকি দিয়ে সরকারি আধিকারিককে হোটেলে ‘বন্দি’, কলকাতা-হাওড়ায় গ্রেপ্তার ৮
প্রতিদিন | ০৭ জুন ২০২৫
অর্ণব আইচ: ডিজিটাল গ্রেপ্তারির নামে এক কেন্দ্রীয় সরকারি অধিকর্তার টাকা হাতানো থেকে শুরু করে ভয় দেখিয়ে পার্ক স্ট্রিটের হোটেলে ‘বন্দি’ করে রাখা ? সাইবার জালিয়াতি নিয়ে ধারাবাহিক ঘটনায় পুলিশের জালে ৮। প্রতারণার শিকার ওই আধিকারিকের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে কলকাতা ও হাওড়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল, বহু আধার-প্যানের জেরক্স, ব্যাঙ্কের চেকবই উদ্ধার হয়েছে। সেসব বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। শুক্রবার আলিপুর আদালতে তাদের পেশ করা হলে আগামী ১৮ জুন পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
ঘটনা প্রায় সপ্তাহ দুই আগের। গত ২৩ মে সৌভিক শিকদার নামে কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিক সাইবার জালিয়াতি নিয়ে পর্ণশ্রী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের ডেপুটি ডিরেক্টর পদমর্যাদার ওই আধিকারিকের অভিযোগ, মুম্বই পুলিশের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি তাঁকে বলে, একটি পার্সেল ধরা পড়েছে, যার মধ্যে থেকে মাদক উদ্ধার হয়েছে। যে ঠিকানাটি দেওয়া হয়েছে, সেটি তাঁর আধার কার্ডের। মুম্বই পুলিশ সিবিআইকে বিষয়টি জানাচ্ছে। তাঁকে অনলাইনে কিছু ভুয়ো নথিও পাঠানো হয়। এর পর তাঁকে ‘নির্দেশ’ দেওয়া হয়, নিরাপত্তার জন্য একটি হোটেলে গিয়ে নিজেকেই বন্দি করতে। তিনি পার্ক স্ট্রিটের একটি হোটেলে গিয়ে এমনভাবে নিজেকে ‘বন্দি’ করেন যে, রুমের বাইরে খেতেও যেতেন না। ধাপে ধাপে তাঁর কাছ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা আদায় করে জালিয়াতরা।
সৌভিকবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ। নিউটাউন এলাকা থেকে নরপত সিং, রাজেন্দ্র সোনি, হরিশ কুমার নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বৃহস্পতিবার। তাদের জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। গোলাবাড়ি এলাকা থেকে মনোহর, সংগ্রাম সিং, সুরজ, দিলীপ, জিতেন্দ্র নামে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জানা গিয়েছে, ধৃত মোট ৮ জন আলাদা দল গড়ে ‘অপারেশন’ চালাত। এদের কাছ থেকে দুটি সোয়াইপ মেশিন, ৫টি মোবাইল ফোন, বেশ কিছু নথিপত্র, একাধিক ব্যাঙ্কের পাস ও চেকবই উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবার তাদের আলিপুর আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।