• ম্যারাথন বৈঠকে মানভঞ্জন নিচুতলার, কংগ্রেস প্রার্থীর প্রচারে যোগ দিলেন সিপিএম নেতাকর্মীরা
    বর্তমান | ০৭ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: অবশেষে শুক্রবার সকালে কালীগঞ্জ উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে প্রচারে দেখা গেল সিপিএম নেতাকর্মীদের। যা কালীগঞ্জের আসন্ন উপনির্বাচনের রাজনৈতিক লড়াইয়ে অন্য মাত্রা যোগ করতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গত বৃহস্পতিবার অনেক রাত পর্যন্ত স্থানীয় বাম নেতাকর্মীদের এক ম্যারাথন বৈঠক হয়। তাতেই সিপিএমের নিচুতলার মানভঞ্জন হয় বলে খবর। 

    এদিন পলাশী বাজারে কংগ্রেস প্রার্থী কাবিলউদ্দিন শেখ বাম কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচার সারেন। সেখানে উভয় দলেরই পতাকা দেখা যায়। রাজনৈতিক মহলের দাবি, বাম সমর্থন ছাড়া কালীগঞ্জ বিধানসভা কংগ্রেসের একার পক্ষে লড়াই দেওয়া কার্যত অসম্ভব। নদীয়া জেলা কংগ্রেসের সভাপতি অসীম সাহা বলেন, কালীগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনের সিপিএম আমাদের পূর্ণ সমর্থন করেছে। আমরা একে অপরের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে লড়াই করছি। ভোটে বাম-কংগ্রেস জোট অভূতপূর্ব ফলাফল করবে। কালীগঞ্জের সিপিএম নেতা দেবাশিস আচার্য বলেন, শীর্ষ নেতৃত্ব আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে আমাদের ফলাফল ভালো হয়েছিল।‌ উপনির্বাচনেও আমরা ভালো ফল করব। কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচন ঘিরে শুরু থেকেই জটিলতা তৈরি হয়েছিল বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের মধ্যে প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে। অতীতে এই কেন্দ্রটি ছিল বামফ্রন্টের শরিক আরএসপি-র দখলে। তবে সম্প্রতি এই এলাকায় সিপিএমের উত্থানে পাল্টে গিয়েছে সমীকরণ। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে কালীগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় সিপিএম প্রার্থী প্রায় ৩৫ হাজার ভোট পান। যার ফলে স্থানীয় নেতৃত্ব আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে, এবং দাবি তোলে এবার তাদের দল থেকেই প্রার্থী দেওয়া হোক। অন্যদিকে, আরএসপি আসনটি চায়, তাদের পুরনো উপস্থিতি ও সাংগঠনিক ভিত্তির দোহাই দিয়ে। ফলে বামফ্রন্টের ভিতরেই শুরু হয় দড়ি টানাটানি। এরই মাঝে কংগ্রেসও দাবি জানায়, জোটগত স্বার্থে তাদেরই প্রার্থী দেওয়া উচিত। এই টানাপোড়েনের মাঝেই শেষপর্যন্ত প্রার্থী ঘোষণা করে কংগ্রেস। ‘খাতায়-কলমে’ বামফ্রন্ট কংগ্রেসের প্রার্থীকে সমর্থন জানালেও, মাঠে-ময়দানে তার প্রতিফলন এতদিন দেখা যায়নি। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় কংগ্রেস প্রার্থীর পাশে ছিল না বাম নেতৃত্ব। যা নিয়ে প্রশ্নও ওঠে। কালীগঞ্জের উপনির্বাচন শুধুমাত্র একটি কেন্দ্রের ভোট নয়, বরং এটি দুই দলের পারস্পরিক আস্থা ও সমন্বয় পরীক্ষারও মঞ্চ হয়ে উঠেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। গত বুধবার সিপিএমের জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক হয় কালীগঞ্জ স্থানীয় নেতাদের। সেখানে তিনজন জেলা কমিটির সদস্য এবং দুজন এরিয়া কমিটির সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সেখানেও নিচুতলার নেতারা জেলা নেতৃত্বের কাছে নিজেদের মনের কথা জানান। সেখানে নেতাদের মানভঞ্জন করা হয়। তারপর স্থানীয় নেতৃত্ব নিজের এরিয়ায় বৃহস্পতিবার বৈঠক করেন। পাশাপাশি বাম নেতৃত্বের সঙ্গেও আলাপচারিতা সারেন কংগ্রেস প্রার্থী। সেইসঙ্গে ভোটের রণকৌশল তৈরি করা হয়। রাতের দিকে মিরা-১ পঞ্চায়েতে শেয়ালখেলা এলাকায় বেশ কয়েকটি পরিবার কংগ্রেসে যোগদান করে।‌ শুক্রবার সকালে পাকাপাকিভাবে কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে দেখা যায় সিপিএমকে।  
  • Link to this news (বর্তমান)