নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: এবার আসানসোলের কুখ্যাত দুষ্কৃতী ‘প্যাঁও’য়ের নতুন কীর্তি সামনে এল। লুট, শ্যুট আউটের পর এবার তার নাম জড়াল জাল নোটের কারবারেও। বৃহস্পতিবারই আসানসোল বাজার থেকে ৫০০টাকার চারটি জাল নোট সহ প্যাঁওকে হাতেনাতে ধরে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিস। তার একটি আইফোন ও বাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শুক্রবার ওই কুখ্যাত দুষ্কৃতীকে আদালতে তুলেছিল পুলিস। যদিও তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় পুলিসকে। পুলিস কেন কোনও বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে জাল নোট সংক্রান্ত রিপোর্ট সংগ্রহ করেনি, প্রশ্ন তোলেন বিচারক। বিচারক অভিযুক্তকে মঙ্গলবার পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। সেদিন রিপোর্ট ও কেস ডায়েরি জমা করার কথা বলা হয়েছে।
এসিপি বিশ্বজিৎ নস্কর বলেন, জাল নোট সহ একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
হীরাপুর থানার এক চিলতে ঘরেই বেড়ে ওঠা আসানসোলের ত্রাস প্রতাপ দাস ওরফে ‘প্যাঁও’য়ের। বাবা টোটো চালক। কিন্তু, সে বাবার মতো পরিশ্রম করে টাকা রোজগারের রাস্তায় হাঁটেনি। মোবাইল চুরি দিয়ে অপরাধ জগতে হাতেখড়ি হয়। নাবালক বয়সে পুলিসের হাতে ধরা পড়লেও ‘অতি ভদ্র’ প্যাঁওকে অনেক সময় রেহাই দিয়েছিলেন তৎকালীন পুলিস কাকুরা। তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গেই তার অপরাধের পরিধি বাড়তে থাকে। সে রাস্তা ঘাটে মোবাইল ও হার ছিনতাই শুরু করে। তারপর দোকানের শাটার কেটে লুট। নাবালক অবস্থায় একাধিক মদের দোকানে লুটপাটের ঘটনায় প্রথম সকলের নজরে আসে প্যাঁও। অপরাধ জগতেও তার পারদর্শীতা প্রশংসিত হয়। ফলস্বরূপ, একের পর এক বড় অপারেশনের ‘দায়িত্ব’ পায় সে। সালানপুরে পেট্রল পাম্পে প্রকাশ্যে গুলি ছুড়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। বাঁকুড়ায় জেল থেকে মুক্ত রাজনৈতিক নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনাতেও তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। সাবালক প্যাঁওয়ের বেশিরভাগ দিনই কেটেছে জেলের ভাত খেয়ে। পুলিস জানে প্যাঁও জেলের বাইরে মানেই ঘটবে বড় অপরাধ। তাই তার আচরণবিধির উপর সর্বক্ষণ নজর রাখা হয়।এদিন পুলিস গোপনসূত্রে খবর পায়, জাল নোট কাণ্ডেও নাম লিখিয়েছে প্যাঁও। এরপরই অতর্কিতে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিস তাকে আটকে তল্লাশি চালায়। তাতেই তার কাছ থেকে পাওয়া যায় জাল নোট। যদিও জাল নোট বাজেয়াপ্ত করার ক্ষেত্রে কারেন্সি বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট নেওয়া উচিত ছিল বলে বিচারক স্মরণ করান। অভিযুক্তর আইনজীবী জামিনের আবেদন করলেও বিচারক তা খরিজ করে দেন।