নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: গত কয়েক বছরে পুরুলিয়া শহরের বুকে একের পর এক শপিংমল, আবাসন, রেস্তরাঁ গজিয়ে উঠেছে। অথচ তাদের বেশিরভাগেরই ফায়ার লাইসেন্স নেই। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও নেই। সম্প্রতি পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টি পুরসভা ও দমকলের আধিকারিকদের নজরে এসেছে। প্রশ্ন উঠেছে, যে সমস্ত জায়গায় প্রতিদিন শয়ে শয়ে লোকের সমাগম হয়, সেখানে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই কেন? কোনও অগ্নিকাণ্ড ঘটলে কীভাবে সামাল দেবে কর্তৃপক্ষ?
সম্প্রতি পুরুলিয়া শহরের বিভিন্ন শপিংমল, আবাসন, রেস্তরাঁয় আচমকা পরিদর্শনে যান পুরসভার চেয়ারম্যান নব্যেন্দু মাহালি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুরসভা ও দমকলের আধিকারিকরা। পরিদর্শনে মোটেই সন্তুষ্ট নন চেয়ারম্যান। যেমন, দেশবন্ধু রোডের একটি নামজাদা বহুতলে রুফটপ রেস্টুরেন্ট রয়েছে। সেই রেস্তরাঁর কাগজপত্র ঠিক থাকলেও ব্যবস্থাপনায় খুশি হয়নি পরিদর্শনকারী দল। চেয়ারম্যান বলেন, পর্যাপ্ত জল, ফায়ার এক্সিট সহ একাধিক ব্যবস্থাপনায় গলদ রয়েছে। কর্তৃপক্ষকে ঠিকঠাক ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শহরের বেশিরভাগ শপিংমলে অগ্নিনির্বাপণ-সংক্রান্ত ছাড়পত্র নেই। বড় বহুতলে ব্যবসা করতে গেলে অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলার যে সমস্ত ব্যবস্থা থাকা দরকার, সেসবও নেই। ইমার্জেন্সি এক্সিট গেটও রাখা হয়নি। অন্য বহুতলের ক্ষেত্রেও ছবিটা একই। প্রশ্ন উঠছে, কাদের মদতে দমকলের অনুমতি না নিয়ে এসমস্ত বহুতল তৈরি হয়েছে ও শপিংমল চলছে?
চেয়ারম্যান বলেন, শহরের রেস্তরাঁ, শপিংমল, আবাসনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। আমরা কয়েকটি জায়গা পরিদর্শন করেছি। তাতে খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। সরকারি নিয়মকানুন না মানা হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। গত কয়েকবছরে রাজ্যে একাধিক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। অগ্নিকাণ্ডে অনেকের মৃত্যুও হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, সঠিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় সবকিছু পুড়ে ছাই হয়েছে। দমকল বিভাগের এক কর্তা বলেন, যে কোনও বহুতল, শপিংমল কিংবা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তৈরির আগে দমকলের অনুমতি নিতে হয়। দমকলের আধিকারিকরা সেই জায়গা পরিদর্শন করে দেখেন, সেখানে জলের ব্যবস্থা, ফায়ার ডিটেক্টর, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ইত্যাদি আছে কি না। অগ্নিকাণ্ডের সময় মানুষের বের হওয়ার জন্য জরুরি গেট রয়েছে কি না, তাও দেখা হয়। সবকিছু খতিয়ে দেখার পরই দমকলের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। তিনবছর অন্তর সেই ছাড়পত্র পুনর্নবীকরণ করতে হয়। তবে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই তা করে না।