ডব্লুবিসিএসে চমক ঘাটালের নিম্নবিত্ত পরিবারের দুই যুবক
বর্তমান | ০৭ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, ঘাটাল: ঘাটাল মহকুমার দুই গরিব পরিবারের যুবক ডব্লুবিসিএসের গ্রুপ ‘এ’-তে দুর্দান্ত ফল করেছেন। ঘাটাল থানার শোলাগেড়িয়া গ্রামের শেখ মনজুর আহম্মেদ ডব্লুবিসিএসের গ্রুপ ‘এ’-তে কমন সপ্তম র্যাঙ্ক করেছেন। অন্যদিকে ঘাটাল শহরের কোন্নগরের অনিমেষ পান্ডা ওই একটি গ্রুপে ২৪ র্যাঙ্ক করেছেন। দু’জনেই অতি সাধারণ পরিবারের। শুক্রবার এই খবর জানাজানি হতেই অভিনন্দনের বন্যা ভেসে যাচ্ছেন দুই যুবক।
অত্যন্ত সাধারণ এক কৃষক পরিবারের সন্তান মনজুর। বাবা জমিতে কাজ করেন। এক দাদা জরির কাজে যুক্ত। সেই প্রান্তিক পরিবার থেকেই নিরলস সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে এই অসাধারণ সাফল্য পেয়ে মনজুর সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। মনজুর জানান, এর আগে তিনি রাজ্য পুলিসের এসআই পদে চাকরি পেলেও যোগ দেননি। কেন্দ্রীয় ট্যাক্স বিভাগেও চাকরি পান এবং সেখানে ৯ মাস কাজ করেন। পরে ২০২১ সালের ডব্লুবিসিএসের ‘সি’ গ্রুপে উত্তীর্ণ হয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্শিয়াল ট্যাক্স অফিসার পদে যোগ দেন। চাকরিরত অবস্থাতেই ফের ডব্লুবিসিএস পরীক্ষায় বসে এবার এগজিকিউটিভ ক্যাডারে সপ্তম স্থান এবং এগজিকিউটিভের নিরিখে পঞ্চম র্যাঙ্ক অর্জন করে নিজের যোগ্যতার ছাপ রাখলেন তিনি।
অনিমেষের বাড়ি ঘাটাল শহরের কোন্নগরে। এক ভাই ও এক বোন। অনিমেষের বাবা তাপস পান্ডার একটি চায়ের দোকান ছিল। কিন্তু, অসুস্থতার কারণে সেই দোকান তিনি বেশ কয়েক বছর চালাতে পারেননি। মা মৌসুমী পান্ডা গৃহবধূ। বোন সুতপা মাস্টার্স শেষ করে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসছেন। ছোটবেলা থেকেই অনিমেষকে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয়েছে। তিনি বলেন, আমার পারিবারিক এবং পারিপার্শ্বিক চাপে আমি কখনওই ভেঙে পড়িনি। তাই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হয়েও আমার পাখির চোখ ছিল ডব্লুবিসিএস। ২০২১ সালের ডব্লুবিসিএসের সি গ্রুপে র্যাঙ্ক করে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্শিয়াল ট্যাক্স অফিসার পদে যোগ দিই। এবার ডব্লুবিসিএসের গ্রুপ ‘এ’-তে কমন র্যাঙ্ক করেছি ২৪। ওয়েস্ট বেঙ্গল রেভিনিউ সার্ভিস (ডব্লুবিআরএস) নিরিখে তাঁর র্যাঙ্ক হয়েছে চার। চাকরি পাওয়া যাচ্ছে না বলে যখন বহু যুবক-যুবতী হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, সেই পরিস্থিতিতে দুই যুবকের সাফল্য ঘাটাল মহকুমার এই প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীদের নতুন করে উৎসাহ দেবে বলে মহকুমাবাসী মনে করেন। ওই দুই সফল ছাত্র বলেন, স্থির লক্ষ্যের পাশাপাশি যদি কঠোর পরিশ্রম থাকে তাহলে যে কোনও কাজেই সাফল্য আসতে বাধ্য।