জনতার চিকিৎসায় মমতার ‘সাথী’! স্বাস্থ্যসাথী ব্যবহারে নজির গড়ল উত্তর ২৪ পরগনা
প্রতিদিন | ০৭ জুন ২০২৫
অর্ণব দাস, বারাসত: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম জনপ্রিয় ও জনমুখী প্রকল্প স্বাস্থ্যসাথী। চিকিৎসা ক্ষেত্রে আমজনতার ভরসা। আর এই সরকারি প্রকল্পটি গত অর্থবর্ষে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় মাইলফলক ছুঁয়েছে। জানা গিয়েছে, দু’লক্ষের বেশি মানুষের চিকিৎসার জন্য রাজ্য সরকার ব্যয় করেছে কমবেশি ২৫১ কোটি টাকা। এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, কত মানুষ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে উপকৃত হয়েছেন।
রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক জনহিতকর প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই তালিকার প্রথম সারিতে রয়েছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। প্রত্যেকটি পরিবারের বয়ঃজ্যেষ্ঠ মহিলা সদস্যের নামে সরকার থেকে এই কার্ড ইস্যু করা হয়। এই প্রকল্প চালু হওয়ায় রাজ্যবাসীর চিকিৎসার খরচ কমেছে অনেকটাই। বছরে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ রাজ্য সরকার বহন করে। সেই জোরে বেসরকারি নার্সিংহোমে যাওয়ার সাহস পেয়েছেন দুস্থ, অসহায় মানুষ। হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে জেলা, রাজ্য, এমনকি দেশের বিভিন্ন নথিভুক্ত হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামুল্যে চিকিৎসা পাওয়া যায়। সাধারণ অসুখই শুধু নয়, জটিল রোগ যেমন, হৃদরোগ থেকে ক্যানসার চিকিৎসা, দাঁত থেকে নাক-কান-গলা, গ্যাস্ট্রো থেকে শিশুরোগের চিকিৎসা, স্নায়ু, স্ত্রীরোগ-সহ জটিল অস্ত্রোপচার একাধিক রোগের চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যায় এই কার্ডের মাধ্যমে।
নিয়ম অনুযায়ী, হাসপাতালে ভর্তির আগে একদিন আর ছাড়া পাওয়ার ৫ দিন পর্যন্ত সমস্ত ওষুধও এই প্যাকেজের অন্তরভুক্ত। এমনকী হাসপাতাল থেকে ছুটির সময়ে রোগীর গাড়ি ভাড়া বাবদও টাকাও দেয় সরকার। এই প্রকল্প উত্তর ২৪ পরগণা জেলায়, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসার খরচ নজর কেড়েছে। এই জেলায় স্বাস্থ্যসাথীর উপভোক্তার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৫ লক্ষ। যার মধ্যে এখনও পর্যন্ত উপকৃত হয়েছেন ৫ লক্ষের বেশি মানুষ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে এই জেলার চিকিৎসায় ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে রাজ্য সরকারের ব্যয় হয়েছে কমবেশি ২৫১ কোটি টাকা। চিকিৎসা পরিষেবা পেয়েছেন প্রায় ২ লক্ষ ৩ হাজার রোগী। মার্চের পর এপ্রিল ও মে মাসে জেলায় আরও কয়েক কোটি টাকার চিকিৎসা হয়েছে। নতুন করে ওই বছর প্রায় ১৮ হাজার মানুষ কার্ড করিয়েছেন। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী জানিয়েছেন, ”রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে জেলার বহু মানুষ চিকিৎসা করাচ্ছেন। আমরা সার্বিকভাবে সব দিকেই নজর রাখি। এর জন্য আমাদের জেলায় বিশেষ টিমও আছে।”