এই সময়, খড়্গপুর: বেহাল রাস্তার কারণে গ্রামে অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতে পারেনি। নিরুপায় হয়ে এক রোগীকে বাঁশের মাচায় করে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন স্থানীয় লোকজন। কিন্তু পথেই মারা যান বাদল মান্ডি (৪০) নামে সেই যুবক।
বুধবার ডেবরার কাঁকড়া গ্রামের ওই ঘটনার পরে বৃহস্পতিবার গ্রামে গিয়েছিলেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পিঙ্কু পন্ডা। শুক্রবার ওই এলাকায় গিয়ে রাস্তার হাল খতিয়ে দেখলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তথা এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য শান্তি টুডু।
ওই এলাকায় কোন কোন রাস্তা খারাপ, তা সংস্কারের জন্য কোনও কী পদক্ষেপ করা যায়, সে সব খতিয়ে দেখেন। ওই এলাকার একাধিক রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে স্থানীয় মানুষের কাছে অভিযোগও শোনেন তিনি।
শান্তি বলেন, ‘এই এলাকায় চারটি বেহাল রাস্তা সংস্কার করা হবে। খুব শিগ্গির কাজ শুরুও হবে। শুক্রবার থেকেই একটি রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।’
ডেবরা ব্লকের ৯ নম্বর ষাঁড়পুর লোয়াদা গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁকড়া গ্রামে যাওয়ার রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল বলে অভিযোগ। সেই গ্রামেই শ্বশুরবাড়ি ডেবরা ব্লকেরই গোলগ্রামের বাসিন্দা বাদল মান্ডির। বুধবার তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অভিযোগ, রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স না-ঢোকার কারণে বাঁশের মাচায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই বাদলের মৃত্যু হয়। ওই অভিযোগ সামনে আসার পরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার ওই গ্রামে গিয়েছিলেন প্রধান। এ দিন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের সঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধান ও তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি দিলীপ ঘোষও ঘটনাস্থলে যান।
কর্মাধ্যক্ষ জানান, কাঁকড়া গ্রামটি বড়। গ্রামের দু’দিকে দু’টি রাস্তা রয়েছে। দু’টি রাস্তাই সংস্কার করা হবে। পঞ্চানন সামন্তর বাড়ি থেকে পূর্ত দপ্তরের পাকা রাস্তা পর্যন্ত যে পথটি রয়েছে সেটি পথশ্রী প্রকল্পের টাকায় সংস্কার করা হবে। ০.৯ কিলোমিটার রাস্তাটি ৬ ফুট চওড়া করে সংস্কার করা হবে। আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১ লক্ষ টাকা।
দ্বিতীয়টি হলো, কাঁকড়া থেকে হরিণাগেড়িয়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা। জেলা পরিষদ থেকে রাস্তাটি সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই রাস্তাটি সংস্কার হয়ে গেলেই লাউগেড়িয়া হয়ে ডুবেরপুকুরে টাবাগেড়িয়া-বালিচক পিচরাস্তায় পৌঁছে যাবেন এলাকার মানুষ।
ওই এলাকার গয়েশপুরে পূর্ত দপ্তরের পাকা রাস্তা থেকে গয়েশপুরের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পর্যন্ত ১ কিলোমিটার রাস্তাটির সংস্কারের জন্য ২৪ লক্ষ টাকা আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সাপ্লিমেন্টারি প্রকল্পে।
আর রয়েছে কলাপুঞ্জ থেকে চকবাজিত পর্যন্ত আরও একটি রাস্তা। ওই এক কিলোমিটার রাস্তাটি ঢালাই করা হবে। জেলা পরিষদের মাধ্যমে ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ওই রাস্তার কাজটি শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে।