• বহু ডুবন্ত মানুষকে বাঁচিয়েছেন, চুঁচুড়ায় গঙ্গায় স্নানে নেমে তলিয়ে গেলেন সেই সুরেন্দ্রই
    প্রতিদিন | ০৭ জুন ২০২৫
  • সুমন করাতি, হুগলি: নিয়মিত সকালে মাঠে দৌড়তেন। তারপর গঙ্গায় স্নান করার অভ্যাসও ছিল। অতীতে বহু ডুবন্ত মানুষকে মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচিয়ে এসেছেন। আজ তিনিই গঙ্গায় ডুবে গেলেন। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে, হুগলির চুঁচুড়ার পুরনো লঞ্চঘাটে। মৃত ব্যক্তির নাম সুরেন্দ্র সাহানি(৫০)। তিনি চুঁচুড়া বড়বাজার এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। চলতি বছর নভেম্বর মাসে তাঁর কন্যার বিয়ে বলেও জানা গিয়েছে। দুঃসংবাদ পাওয়ার পরই পরিবারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। শোকের ছায়া এলাকায়।

    পেশায় ব্যবসায়ী সুরেন্দ্র সাহানি এলাকায় যথেষ্ট পরিচিত মুখ। নিয়মিত শরীরচর্চা করতেন। প্রতিদিন সকালে মাঠে দৌড়তেন। এরপর পুরনো লঞ্চঘাটের গঙ্গায় নেমে সাঁতার কাটতেন। স্নান সেরে বাড়ি ফিরতেন তিনি। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে এই রুটিন চলছিল। অতীতে গঙ্গায় স্নান করার সময় বহু ডুবে যাওয়া মানুষকে মৃত্যুর মুখ থেকে তিনি বাঁচিয়েওছেন। সেই হিসেবে তাঁর সুনামও ছিল বিভিন্ন মহলে।

    আজ শনিবার সকালে তিনি প্রতিদিনের মতো গঙ্গায় স্নান করতে নেমেছিলেন। হঠাৎ করেই তিনি তলিয়ে যান। ঘাটে থাকা অন্যান্যরা তাঁকে বাঁচানোর জন্য জলে ঝাঁপিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে পাওয়া যায়নি। খবর থেকে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় চুঁচুড়া থানার পুলিশ। বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরাও তল্লাশি শুরু করেন। তবে এদিন বেলা পর্যন্ত তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে খবর। ঘটনা শুনে গঙ্গার ঘাটে পৌঁছে গিয়েছিলেন এলাকার বিধায়ক অসিত মজুমদার, সপ্তগ্রামের বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিতা চট্টোপাধ্যায়। বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত জানান, “আগে অনেক লোককে গঙ্গায় ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচিয়েছেন সুরেন্দ্র। আজ স্নানে নেমে অসুস্থ হয়ে ডুবে যান।” বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, “যে জলে ডোবা থেকে বাঁচাতে পারেন, সেই জলে ডুবে গেলে সেটা নিয়তি ছাড়া আর কী!”

    জানা গিয়েছে, আগামী নভেম্বর মাসে সুরেন্দ্র সাহানির মেয়ের বিয়ে। বিয়ের তোড়জোড়ও চলছে বাড়িতে। গতকাল, শুক্রবারই বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য লজ বুক করা হয়েছে বলে খবর। এই খবর বাড়িতে আসার পরই পরিবারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। সুরেন্দ্রই ব্যবসার দেখভাল করতেন। ফলে আগামী দিনে কী হবে, তাই নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে ওই পরিবারের।
  • Link to this news (প্রতিদিন)